গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি বলেছেন, গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের বিচারের পাশাপাশি আইন প্রণয়ন করে হলেও দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে।
সোমবার (২৪ মার্চ) ময়মনসিংহের একটি রেস্টুরেন্টে গণসংহতি আন্দোলনের ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
জুনায়েদ সাকি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ক্রেডিট নিয়ে টানাটানি চলছে, একদল ক্রেডিট নিজেদের দখলে নিতে চায়। ৫ আগস্টের পরে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে, ট্যাগিং করা হচ্ছে ফ্যাসিস্টের কায়দায়; এতে পুরোনো ফ্যাসিস্টদের পুনর্জাগরণের পথ তৈরি করবে। যারা বিভাজন তৈরি করবে তাদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংস্কারের জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন দিতে হবে। এমন কোনো ভূমিকা নেওয়া যাবে না যাতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়। কেউ বলছেন সংস্কার, কেউ বলছেন নির্বাচন; অথচ কথা ছিল সংস্কার ও নির্বাচন হবে এক সঙ্গে। এ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আবারও যে একটা নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সেটা যেন বেহাত না হয়। ১৯৭১ সালে আমরা একটা রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা এ বাংলাদেশ অর্জন করেছি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, কিন্তু মানুষের যে আশা সেটা বেহাত হয়ে গেছে। স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। ’৭২ সাল থেকে এখানে সাংবিধানিকভাবে এমন একটা ক্ষমতা কাঠামো তৈরি হয়েছে সেখানে সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত। তিনি জবাবদিহিতা ও সংবিধানের ঊর্ধ্বে এবং সেটাই ৫৪ বছরে আমরা দেখেছি। একটা নির্বাচন পর্যন্ত আয়োজন করা যায় না। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তৈরি করা হয় সেটাকেও দখল করার চেষ্টা করা হয়। শেষে তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে দিয়ে জমিদারি তন্ত্র কায়েম করা হয়। ফ্যাসিবাদী কায়েম করা হয়েছে। এমন তুলনা পৃথিবীতে পাওয়া মুশকিল।
সাকি বলেন, যত ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা আছে সেগুলো থেকে পদ্ধতি ধার নিয়ে শেখ হাসিনা ১৫ বছর ধরে শাসন চালিয়ে গেছে। যারা বিরোধিতা করবে তাদের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। আমরা সমস্ত কিছু মোকাবিলা করে এ অভ্যুত্থানে বিজয়ী হয়েছি। কীসের জন্য? মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল যা ৫৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি, যেটা আবার জুলাইয়ে এসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বপ্ন তৈরি করেছে। যাতে করে স্বপ্নটা বাস্তবায়ন হয়।
তিনি বলেন, জনগণের প্রতিনিধি যারা হবেন তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। সেটা গণতান্ত্রিক রিপাবলিক। যেটা উল্টো বাংলাদেশে হয়েছে। আমরা ভোট দিয়ে কাউকে নির্বাচিত করি বা না করি তারা নিজেদের নির্বাচিত করে আমাদের প্রভু বনে গেছে। জনগণের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন। সবকিছু করা হয়েছে নিজেদের সম্পদ লুট করার জন্যে। কী পরিমাণ সম্পদ লুট করা যায় আমরা এ ১৫ বছরে দেখলাম।
গণসংহতি আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান রাজিবের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রুকনুজ্জামান রোকন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, জেলা নাগরিক ঐক্যের সদস্য সচিব হাতেম রানা, গণঅধিকার পরিষদের নেতা রাহাত জাহান হোসেন, আলী ইউসুফ, আবুল কালাম আল আজাদ।
মন্তব্য করুন