সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুর ২টায় উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের পিঠাপশী ও ঘোড়াডুম্বুর গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের চিকিৎসার জন্য সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টায় ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে লেগুনাচালক ফখরুল ইসলামের ১৫ মাসের এক শিশু সন্তান গুরুতর অসুস্থ হয়। তাকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নেওয়ার জন্য নিজেই লেগুনা নিয়ে বের হন ফখরুল। এ সময় সঙ্গে ছিলেন ফখরুলের মা, স্ত্রী ও এক ভাই। শিশুটির অবস্থা সংটাপন্ন হওয়ায় গাড়িতে কান্নাকাটি করছিলেন শিশুর মা ও দাদি। পথিমধ্যে ঘোড়াডুম্বুর গ্রাম অতিক্রম করার সময় সে এলাকার লোকজন গাড়ির ভেতর থেকে কান্নার আওয়াজ আসায় তা অপহরণের ঘটনা বলে মনে করে।
তখন তারা পার্শ্ববর্তী গ্রাম পিঠাপশীর লোকজনকে ফোনে কল করে গাড়িটি আটকে ঘটনা কী তা জানার কথা বলে। এমন খবরে পিঠাপশী গ্রামের এমরাজ মিয়া, ছালিক মিয়া ও শামীম মিয়াসহ কয়েজন ফখরুলের দ্রুত গতির গাড়িকে থামার ‘সিগন্যাল’ দেন। কিন্তু ফকরুল গাড়ি না থামালে এবং গাড়ির ভেতর থেকে মহিলার কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়ায় তাদের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। পরে মোটরসাইকেল দিয়ে তাড়া করে এবং সামনের গ্রাম খারাইয়ের মানুষের সহায়তায় খারাই পয়েন্টে লেগুনাকে আটকানো হয়। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে উপস্থিত লোকজনদের প্রকৃত ঘটনা না বলে রাগারাগি করেন ফখরুল। তখনই হট্টগোল বেঁধে যায় এবং ফখরুলকে আটকে রাখে উপস্থিত লোকজন। পরে বিষয়টি বুঝতে পারলে শিশু সন্তানকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেয় খারাই ও পিঠাপশী গ্রামের লোকজন।
এ ঘটনার জেরে সোমবার দুপুরে পিঠাপশী গ্রামের হেলাল আহমদ (২০) ঘোড়াডুম্বার গ্রামে গেলে তাকে আটকে রাখে ওই গ্রামের লোকজন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হেলালের গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর ২টায় দুপক্ষের লোকজনের ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে পিঠাপশী গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- আয়েছ মিয়া, মিজানুর রহমান ছুরুক, আমরাজ মিয়া, জুনেদ আহমদ। ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের ফয়সল আহমদ, ছুরত মিয়া, ফখরুল ইসলাম, সাইকুল ইসলাম, খোয়াজ আলী ও মনসুর উদ্দিন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে অন্যদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। মামলা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন