নওগাঁর বদলগাছীতে প্রাইভেটকার চালক কল্যাণ সমিতির কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে মোস্তাকিম নামে এক কলেজ ছাত্রদল নেতা ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এ সময় বেধড়ক মারধর করে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টায় বদলগাছী থানা মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ওই রাতেই সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদলগাছী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- বদলগাছী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাকিম। তিনি কলেজপাড়ার আজাহার আলীর ছেলে। হঠাৎপাড়ার আবিদ হোসেন ও নাঈম হোসেন, কলেজ পাড়ার জুয়েল হোসেন ও কাদিবাড়ির আরিফ হোসেন। তারা সবাই বদলগাছী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় সদস্য বলে জানা গেছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের নামে অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বদলগাছী কলেজ শাখার ছাত্রদল নেতা মোস্তাকিমসহ তার সঙ্গীরা প্রায় ১৫-২০ জন থানার মোড়ে রাত সাড়ে ৮টায় বদলগাছী কার মাইক্রো কল্যাণ সমিতির সদস্য আজিজার ও উত্তম কুমারের কাছে আশি হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দিলে তাদের মাইক্রো চালাতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে সমিতির সদস্য আজিজার ও উত্তম মহন্তকে বেধড়ক মারধর করে। এবং আজিজারের কাছে থাকা নগদ ২১ হাজার ৭ শত ৩০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তারা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন গেলে ছাত্রদল নেতা মোস্তাকিম ও তার সঙ্গীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ভুক্তভোগী সদস্য আজিজার বলেন, আমিসহ আরেক সদস্য উত্তম মহন্ত স্ট্যান্ডে ছিলাম। হঠাৎ ছাত্রদলের মোস্তাকিমসহ কয়েকজন আমাদের কাছে ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দিতে চাইলে আমাকে বেধড়ক মারধর করে ২১ হাজার ৭ শত ৩০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি জানানোর পর সমিতির সাধারণ সম্পাদক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
বদলগাছী কার মাইক্রো কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক বকুল হোসেন বলেন, আমরা কয়েক বছর ধরে থানা মোড়ে কার মাইক্রো ভাড়ায় চালাই। ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী আমার সদস্যের কাছে ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এবং তাদের বেধড়ক মারধর করে ২১ হাজার ৭ শত ৩০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাই থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আইনের মাধ্যমে চাঁদাবাজদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
অভিযোগ ওঠা বদলগাছী সরকারি কলেজ শাখার সদস্যসচিব মোস্তাকিম বলেন, সেখানে চাঁদা চাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। মূলত কয়েকদিন আগে আমার বন্ধুর জিনিসপত্র ঢাকা থেকে আনার জন্য এক মাইক্রো চালকের সঙ্গে ভাড়া চুক্তি হয়। তিনি নির্দিষ্ট সময়ে জিনিসপত্র না এনে টালবাহানা করতে থাকে। কয়েকদিন পর জিনিসপত্র এনে চুক্তির বাহিরে আরও এক হাজার টাকা বেশি নেয়। সেই এক হাজার টাকা বেশি নেওয়ার জন্য আমরা কয়েকজন বন্ধু সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করলে চালকরা আমাদের ওপর চড়াও হয়। পরে আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। সেখানে এক টাকাও চাঁদা চাওয়া হয়নি। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।
সকালে জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সুমন হোসেন কালবেলাকে বলেন, মোস্তাকিম কলেজ শাখার সদস্য সচিব। এই ঘটনা সত্য প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলার নেতাদের জানাবো। কারণ আমরা চাই না কারো জন্য দলের সুনাম নষ্ট হোক।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি শিকার করে বদলগাছী থানার ওসি শাহজাহান আলী জানান, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন