সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আসিফ হোসেন নামে এক কলেজছাত্রকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও তানভীর শাকিল জয়সহ ৩৭৭ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (২৩ মার্চ) নিহত আসিফের মা আসমানী খাতুন বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানা আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় হেনরী ও জয়সহ ৭৭ জনের নাম উল্লেখ করে বাকি ২০০/৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
নিহত আসিফ পৌর এলাকার একডালা পুনর্বাসন মহল্লার নজরুল ইসলামের ছেলে ও সিরাজগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র।
মামলার আসামিদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর বারী শেখ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাকিম, কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী, কাজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদারসহ ৭৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে যায় আসিফ। সেখানে আন্দোলনরত অবস্থায় বেলা ২টার দিকে ভিক্টোরিয়া কোয়ার্টার থেকে সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী ও তানভীর শাকিল জয়ের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা নিয়ে চৌরাস্তা মোড়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। এ সময় ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করতে থাকে। এ সময় তারা কলেজছাত্র আসিফ হোসাইন ও তার বন্ধু শাহীন শেখকে এলোপাতাড়ি মারধর করে হত্যা করে। পরে তাদের লাশ সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী বাড়ির বাথরুমে লুকিয়ে রাখে। পরে গানপাউডার দিয়ে তাদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
নিহত আসিফের মরদেহ শনাক্ত করতে না পেরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের পর গত ৪ মার্চ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সিরাজগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (অ. পিপি) অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর কর্নেল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে নথিভুক্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন