নোয়াখালীর হাতিয়ায় অস্ত্রে ভয় দেখিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মাদ্রাসাপড়ুয়া কিশোরীকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। শনিবার (২২ মার্চ) রাতে নিঝুমদ্বীপ শতফুল বাজারের পাশে ঘটনাটি ঘটে। পরে আহত অবস্থায় কিশোরীকে বাড়ির পাশের খাল পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত আরিফ হোসেন উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি মো. সাহেদ মেম্বারের ছেলে। ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
স্থানীয়রা জানান, রাতে মুখোসধারী কয়েকজন যুবক মাদ্রাসাছাত্রীদের বাড়িতে হানা দেয়। তারা পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে মেয়ের মা ও স্বজনদের পিটিয়ে আহত করা হয়। তারা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে চিৎকার করে মানুষজনকে জানায় স্বজনরা। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে পেছন থেকে ধাওয়া করলে তারা মেয়েটিকে খাল পাড়ে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
শতফুল বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা আফসার জানান, তারাবির নামাজ শেষ করে কিশোরীর বাড়িতে যান তিনি। এ সময় তাকে ঘরের মধ্যে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। তিনি আরও জানান, এই ছেলের জন্য কিছুদিন আগে এই মেয়েটির পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। মেয়ের পরিবার তা প্রত্যাখান করেন। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। মেয়ের বাবা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বিধায় তারা এই ঘটনাটি ঘটানোর সাহস পেয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই বিষয়টি ধাপাচাপা দেওয়ার জন্য ছেলের বাবা, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার মেম্বার, যুবদলের সভাপতি আশ্রাফ, ইব্রাহিমসহ বিএনপির একটি দল ভুক্তভোগীর বাড়ি যান। তারা এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আশ্রাফ জানান, ঘটনাটি মিমাংসার চেষ্টা চলছে। মেয়েকে এই ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
মেয়ের বাবা বলেন, মেয়ে এখনো অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। রাতে ডাক্তার এনে তাকে চিকিসা দেওয়া হয়েছে। রাতে ছেলের বাবা এসে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দেন। আমি তা প্রত্যাখান করেছি। এত বড় একটি ঘটনা ঘটানোর পরও তারা এই ছেলের সঙ্গে মেয়ের কীভাবে বিয়ের চিন্তা করে আমি বুঝতে পারছি না। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রেখেছি।
ছেলের বাবা নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি মো. সাহেদ মেম্বার অপহরণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মেয়ের বাড়ির কাছাকাছি একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে মেয়েকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি। হাতিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি। মেয়েটিকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারেনি। মেয়েটি বর্তমানে তার নিজ বাড়িতে আছে। পরিবারেরর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন