সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়িসংলগ্ন বনে লাগা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বন বিভাগ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের রাতভর চেষ্টায় সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসছে।
রোববার (২৩ মার্চ) সকালে ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা বপুলেশ্বর দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সন্ধ্যার দিকে চলে গেলেও শনিবার রাত ৯টা থেকে বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপলাইনের মাধ্যমে আগুনস্থলে পানি দেওয়া হয়েছে। বনরক্ষী ও বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্থানীয় অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবক রাতভর আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের সঙ্গে কাজ করেছে। আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে আজ (রোববার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলিশাখালী বন টহল ফাঁড়ি এলাকার অন্তত ৩টি এলাকায় আগুনের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে বন বিভাগ। তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট বন অফিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলের দিকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তিন থেকে চারটি স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ধোঁয়া দেখতে পাওয়া যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন বন বিভাগের এক কর্মকর্তা। সেখানে দ্রুত ধোঁয়া বাড়ছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, রোববার সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কলমতেজী টহল ফাঁড়িসংলগ্ন বনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নিয়ন্ত্রণে আসা আগুন আর ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না বা আবার জ্বলে ওঠার শঙ্কায় ঘটনাস্থলে আগুনের অস্তিত্ব খুঁজছেন বন বিভাগ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও করণীয় জানতে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে এই কমিটি করা হয়। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (২২ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি টহল ফাঁড়িসংলগ্ন বনে ধোঁয়া দেখতে পাই স্থানীয়রা। দুপুরের দিকে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে আগুন লাগার স্থান শনাক্ত ও আগুন নির্বাপণের চেষ্টা করে বন বিভাগ। বিকেলের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট।
জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ ও স্থানীয়রা সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে বনের মধ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা ধরে ফায়ার লাইন (শুকনো পাতা, মাটি সরিয়ে নালা) করে। তবে রাত হয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা অভিযান সমাপ্ত করে চলে গেলেও বন বিভাগ নিজস্ব ব্যবস্থায় আগুন লাগে স্থানে পানি দিতে থাকে। বন বিভাগের সঙ্গে যোগ দেয় অর্ধশতাধিক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. লায়ন ফরিদ কালবেলাকে বলেন, সুন্দরবন রেঞ্জের আশপাশের এলাকায় প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ কারণে এই শুষ্ক মৌসুমে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদেরও সতর্কতা বাড়াতে হবে।
মন্তব্য করুন