ঢাকার কেরানীগঞ্জে জোবায়ের হোসেন (৩৭) নামে এক ইট-বালু ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে কেরানীগঞ্জের গোলামবাজার এলাকায় এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত জোবায়ের হোসেনের বাবার নাম মৃত মীর হাবিবুর রহমান। তিনি গোলামবাজার মজিদপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে গোলামবাজারে নিজ ইট-বালুর গদিতে বসেছিলেন জোবায়ের। ঠিক সেসময় স্থানীয় যুবলীগ নেতা সোবহান ঢালীর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক অস্ত্রধারী ব্যক্তি গদিতে হামলা চালায়।
হামলার মুখে প্রাণ রক্ষায় দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন জোবায়ের, কিন্তু হামলাকারীরা তাকে ধাওয়া করে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি মরিয়মের চায়ের দোকানে আশ্রয় নিলে সেখান থেকেও টেনেহিঁচড়ে বাইরে আনা হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
ঘটনার পর আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশে হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোলামবাজার এলাকায় একটি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। থানা তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মোল্লা ফারুক ও জনৈক সেন্টুর মধ্যে এই বিরোধ ছিল।
সম্প্রতি, সেন্টু তার পক্ষ থেকে জমি দেখভালের দায়িত্ব জোবায়েরকে দেন। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি মোল্লা ফারুকের পক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, মোল্লা ফারুকের ইন্ধনে যুবলীগ নেতা সোবহান ঢালী এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। জানা গেছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন সোবহান ঢালী। সেসময় একাধিক হত্যা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, সোবহান ঢালী বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হয় এবং মোল্লা ফারুকের অন্যতম ক্যাডার হিসেবে কাজ করতে থাকে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে কেরানীগঞ্জের সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন