ঝিনাইদহের মহেশপুরে গাছের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে জাফর হোসেন (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে শালিসে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে উপজেলার কাজিরবেড় ইউনিয়নের জীবননগর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাফর হোসেন ওই গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আলমগীর বাদী হয়ে সামান্ত চারাতলা পাড়ার খেলাফত আলীর ছেলে আব্দুল আলীকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের নামে মামলা করেছেন।
নিহতের স্ত্রী জানান, এজাহারের ৪নং আসামি আব্বাস আলীর লাগানো গাছ জমি মাপামাপির পর জাফর হোসেনের অংশে চলে যায়। এরপর আট বছর আগে জাফর হোসেন ওই গাছ কেটে বিক্রয় করেন। দীর্ঘ ১২ বছর পর ঢাকা থেকে সপ্তাহখানেক আগে সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন জাফর হোসেন। ঘটনার দিন রাতে সালিশের নামে বাড়ি থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যান আসামিরা। শালিসের এক পর্যায়ে জাফর হোসেনকে মারধর করা হলে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।
এদিকে শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে নিহত জাফর হোসেনকে নিজেদের দলীয় কর্মী দাবি করে সামন্তায় লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। জাফর হোসেনের খুনি জামায়াত নেতাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানানো হয় বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসান রনিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
একই সময়ে উপজেলা জামায়াত কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দোষ অস্বীকার করেছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের উপজেলা আমির ফারুক আহম্মেদ বলেন, জীবননগর পাড়ার আব্বাস আলী ও তার খালাতো ভাই জাফর হোসেনের সঙ্গে পূর্বের গাছ কাটা নিয়ে বিরোধ মীমাংসার জন্য গ্রাম্য সালিশ বাসানো হয়। তাদের দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এতে জাফর হোসেন মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। জাফর হোসেন আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। কিন্তু বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর দোষ চাপিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়েজ উদ্দিন মৃধা কালবেলাকে জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামি আটকের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন