বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, কয়েক দিন ধরে আলোচনা হচ্ছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হলে একটি নিয়ম ও পরিকল্পনায় যেতে হবে। দেশ যেহেতু স্বাধীন। তাহলে একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারের সহযোগিতায় শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও দোসরদের বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হতে হবে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির তিনি এ সব কথা বলেন। মান্দারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অডিটরিয়ামে এ আয়োজন করা হয়।
এ্যানি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ নাকি আওয়ামী লীগের বিচারটা গুরুত্বপূর্ণ? বিচারের প্রক্রিয়া যদি চলমান থাকত অটোমেটিক আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কে রোধ করতে পারত? রোধ করার কোনো সুযোগ থাকত না। অবিলম্বে বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন।
তিনি বলেন, হাসিনার পরিবারের বাইরে তার দোসর যারা মন্ত্রী-এমপি ছিল তারা সবাই লুটের সঙ্গে জড়িত ছিল। দুঃশাসন, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। তাদের বিচারও এখনো দৃশ্যমান হয়নি। এ বিচারগুলো দৃশ্যমান হওয়া উচিত। আমরা বারবার বলছি হাসিনার বিচার, তার পরিবার ও দোসরদের বিচার আগে করতে হবে। পৌরসভা, থানায়, উপজেলায় ও জেলায় তাদের নেতৃত্ব দুঃশাসন তৈরি করেছিল। যারা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, তাদের কি গ্রেপ্তার করা হয়েছে? তাদের বিচারও হয়নি। বিচার এখনো হচ্ছে না- এতে আমাদের মনে কষ্ট।
তিনি আরও বলেন, বিচারের প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হয়ে গেলে তখন নির্বাচনের আলোচনা আসবে। সেই আলোকে একটি গোলটেবিল বৈঠক হবে সরকারের সঙ্গে। তখন সব রাজনৈতিক দল বসে সেখানে একটি সমঝোতা চুক্তি করবে। সমঝোতা করেই বলবে আওয়ামী লীগের নির্বাচন করার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ এ দেশে গুম-খুন, অত্যাচার-নির্যাতন, গণহত্যা ও লুট করছে। তাহলে অটোমেটিক সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের একটি বার্তা জাতির সামনে দিতে পারতাম। এখন পর্যন্ত আমরা তা করিনি। তা না করে আমরা রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করছি। জাতির সামনে এই বিবাদটা নিয়ে আসছি। এটি খুব কষ্টকর, দুঃখজনক।
এ্যানি বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা না করে সরকারের সঙ্গে বসেন। সরকারের দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলকে এক টেবিলে এনে আলাপ-আলোচনার প্রেক্ষিতে এ বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুত সম্পন্ন ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধকরণের কাজ সম্পন্ন করা। এজন্য একটি ঐকমত্য-চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া খুব জরুরি।
মান্দারী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আহসান উল্যাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুল্যা আল মামুনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, সদস্য নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আহমেদ ফেরদৌস মানিক, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক এম বেল্লাল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম সারওয়ার, সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল করিম দিপু ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম।
মন্তব্য করুন