সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে মদ্যপানসহ নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। বাসার কাজের আয়ারাও রেহাই পাননি তার হাত থেকে। এর আগে আয়া রেক্সনা তার ইচ্ছেমতো চলতে না পারায় বদলি করেছেন শ্যামনগর।
জানা গেছে, সিভিল সার্জন অফিসের আউটসোর্সিংয়ের আয়া পদে ৮ বছর যাবত চাকরি করেন আম্বিয়া খাতুন। তাকে বিগত ৬ মাস আগে সিভিল সার্জন অফিস থেকে বাসায় নেওয়া হয়। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সিভিল সার্জন মদ্যপান করে আকস্মিক ঘরের দরজা বন্ধ করে তাকে শ্লীলতাহানি করেন। এ সময় সুকৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে যান আম্বিয়া। পরে সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম নিয়মিত মদ্যপানসহ তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আম্বিয়া খাতুন।
আম্বিয়া খাতুন (৩৮) সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর দক্ষিণপাড়া এলাকার মো. আলমগীরের স্ত্রী। তিনি সিভিল সার্জন সাতক্ষীরা অফিসের আউটসোর্সিং কর্মচারী।
ভুক্তভোগী আম্বিয়া খাতুন জানান, সিভিল সার্জন নিয়মিত মদ্যপান করে নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। আম্বিয়া খাতুন বিগত ৮ বছর আগে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সিভিল সার্জন অফিসে আয়া হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৬ মাস আগে সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালামের বাসায় আয়া হিসেবে রবিউল ইসলামের স্ত্রী রেক্সনা খাতুন দায়িত্ব পালন করতেন। তাকে শ্যামনগর বদলি করে সিভিল সার্জন অফিস থেকে আয়া আম্বিয়া খাতুনকে বাসায় রান্না করার কাজসহ ঘরের সব কাজ করতে আদেশ দেন। গত ৬ মাস সিভিল সার্জনের বাসভবনে রান্নাসহ যাবতীয় কাজ করেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত ডা. আব্দুস সালাম আয়া আম্বিয়াকে বোরকা ও হিজাব খুলে বাসায় কাজ করতে বলে এবং তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন। রাজি না হওয়ায় একদিন ঘরে ডেকে জোরপূর্বক দরজা আটকিয়ে শ্লীলতাহানি করলে কান্না করতে করতে বাসা থেকে বের হয়ে যায় আম্বিয়া।
তিনি বলেন, সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে এসব ঘটনা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু অভিযোগ করার পর গত ১৯ মার্চ সিভিল সার্জন অফিসের ডা. জয়ন্ত কুমার স্যাম আমাকে ডেকে নিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করেন মর্মে সাদা কাগজে ২ লাইনে লিখে স্বাক্ষর নেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিভিল সার্জনের বাসায়িআগে আয়া হিসেবে ১০ থেকে ১২ বছর কাজ করেছেন রেক্সনা খাতুন। তাকে শ্যামনগর বদলি করা হয়েছে।
রেক্সনা খাতুন জানান, ৫ থেকে ৬টি সিভিল সার্জন পার করেছি। সিভিল সার্জনের বাসায় রান্নাসহ যাবতীয় কাজ করেছি। সেসব সিভিল সার্জন কত সম্মানী মানুষ আর বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম খারাপ কাজ করার ইশারা-ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দিত। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে শ্যামনগর বদলি করে আম্বিয়াকে বাসায় কাজের জন্য নেয়। শুনেছি তার সঙ্গেও মারাত্মক অপরাধ করেছে যা মুখে বলা যাবে না। বর্তমান এই নারীলোভী সিভিল সার্জনের মতো ইতোপূর্বে এমন অসৎ অফিসার কখনো দেখিনি। নারীলোভী সিভিল সার্জনের বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত কুমার সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আপনি সিভিল সার্জন স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
অভিযুক্ত সিভিল সার্জন সাতক্ষীরা ডা. আব্দুস সালাম বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার অফিসে কয়েকটি পদে নিয়োগ চলছে। আমাকে জিম্মি করে নিয়োগে হস্তক্ষেপ করতে এসব আভিযোগ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন