ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী (সুয়াগঞ্জ) বাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই উচ্ছেদ অভিযান চলে। এতে ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করা হয়। আড়াই শতাধিক স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে মহাসড়ক দখলমুক্ত হওয়ায় যান চলাচল সহজ ও স্বাভাবিক থাকবে—এমনটাই ধারণা। এসব অবৈধ স্থাপনাসহ নিয়মিত বাজার বসার কারণে এখানে যানজট লেগেই থাকত। এ সময় পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য অংশ নেন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ‘মহাসড়কে বাজার বসছে ১৪ বছর ধরে’ শিরোনামে কালবেলায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরই তড়িঘড়ি করে উচ্ছেদ অভিযান চালায় কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বৃহস্পতিবার সকালে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। প্রথমে কুমিল্লা-চট্টগ্রাম পুরাতন সড়কের সুয়াগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকার দু’পাশের শত শত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এই সড়কটির প্রায় পুরোটা ছিল সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডসহ অবৈধ দোকানপাট। পাশের সংযোগ সড়কেও চলে অভিযান।
এরপর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অংশে অভিযান চলে। সুয়াগাজীর ঢাকামুখী সড়ক ও ফুটপাত ঘেঁষে গড়া ওঠা অবৈধ দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই সড়কে নিয়মিত কাঁচাবাজারও বসে আসছিল, যা বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাজার ও অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দিতেই এ অভিযান চালানো হয়। এতে মহাসড়ক দখলমুক্ত হলো।
স্থানীয়রা জানায়, মহাসড়কের ঢাকা অভিমুখী এই বাজার এলাকাটি অনেক পুরোনো। পুরাতন সড়ক, সংযোগ সড়ক ও মহাসড়ক মিলে বৈধ-অবৈধ ১৫শর অধিক দোকানপাট রয়েছে। এর মধ্যে আড়াই শতাধিক অবৈধ দোকানপাট ছিল, যা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা পাকা, সেমি পাকা ও টিনশেডের।
অভিযানে অংশ নেওয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ আদনান ইবনে হাসান কালবেলাকে বলেন, আপনারা সংবাদ করায় জনসচেতনতা বেড়েছে। এতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো সহজ হয়। ঈদকে সামনে রেখে আমরা এমন অভিযান চালাচ্ছি। এতে মহাসড়কে যান চলাচল সহজ ও স্বাভাবিক থাকবে। এ সময় ঘরমুখো মানুষের কারণে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এলাকাটি যানজট প্রবণ ছিল, তাই অভিযান। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, স্থাপনা সরিয়ে নিতে তাদের দেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত সুযোগ।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ রেফাঈ আবিদ বলেন, আগে সড়ক ও জনপথ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার মাইকিং করে ২৪ ঘণ্টার মধ্য অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। এসব প্রক্রিয়া মেনেই উচ্ছেদ অভিযান চলে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা কালবেলাকে বলেন, মহাসড়কের যানজট প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে ঈদের আগে এমন রুটিন উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এরইমধ্যে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের নিমসার বাজার, চান্দিনা ও মাধাইয়া এলাকায় এমন অভিযান চলেছে।
কোথাও জেলা প্রশাসন, কোনো কোনো জায়গায় সড়ক বিভাগ যার যার জায়গায় এসব অভিযান চালায়। আগামীতে মিয়াবাজার ও চৌদ্দগ্রাম অংশে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ঈদ শেষে আবার আগের মতো সব দখল হয়ে যায় এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, অভিযান অব্যাহত থাকবে। আপনারা সংবাদ প্রচার করলে সমস্যা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তখন অভিযান পরিচালনা সহজ হয়।
মন্তব্য করুন