হলুদের রাজ্যে রাজত্ব করা মৌমাছি এবার আমের মুকুলে গুঞ্জন শুরু করেছে। শীতের প্রকৃতিতে বইছে মাঘ মাস। শুরু হয়েছে আগাম আম গাছে সোনালি মুকুল আসা। আম গাছে থেকেও আসছে আমের মুকুলের মৌ মৌ মিষ্টি সুবাতাস। আমের মুকুলের শাখা প্রশাখায় মনের আনন্দে মৌমাছিরা ছুটছে মুকুলে মুকুলে। মধু আহরণে ছুটে আসা মৌমাছির গুঞ্জনে আলাদা এক আবহ তৈরি হয়েছে বসতবাড়ির শখের আমগাছেও।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের মতে, আগাম জাত ও আবহাওয়াজনিত বেশির ভাগ আম গাছে মুকুল এসেছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
বাম্পার ফলনের আশায় বসতবাড়িতে আম চাষিরা আম গাছ পরিচর্যায় করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের পরিচর্যা করে আসছেন তারা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। ছত্রাকজনিত কারণে মুকুল ঝরে না যায় সে জন্যও পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
এ উপজেলা আম্রপালি, হাঁড়িভাঙা, বারি আম-৪, আশিনী, হিমসাগর, ফজলী ও স্থানীয় জাতের চারা চাষিরা নিজ উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে বসতবাড়িতে ও আশপাশের জমিতে নিজেরাই চারা উৎপাদন করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বরাইদ ইউনিয়নের সাভার এলাকার শাকিল হোসেন নামে এক আম চাষি বলেন, প্রতিবছরই আমাদের গাছে আগাম মুকুল আসে। গাছ বড় হওয়ায় কোনো কোনো বছর গাছেই মৌমাছি বাসা বাঁধে। আমের মুকুলের মধু গাছের মৌচাকেই সংরক্ষণ করে। অপরদিকে সহজেই পরাগায়ন হওয়ায় আমে ভরে যায় পুরো গাছ। পাকা আম খেতেও সুস্বাদু।
বালিয়াটি ইউনিয়নের খলিলাবাদ গ্রামের পাখি বলেন, সাটুরিয়ায় ১০ বছর আগেও শুধু দেশীয় জাতের আম গাছ ছিল। সে গাছ ছিল অনেক বড় আকারে। আমরা সাধারণত মকুল আসার পর স্প্রে করতাম। আর এখন সাটুরিয়া উপজেলায় দেশীয় জাতের পাশাপাশি আম্রপালি, হাঁড়িভাঙা, বারি আম-৪, আশিনী, হিমসাগর, ফজলী জাতের অনেক ছোট ছোট বাগান হয়েছে। আমের মৌসুমে দেশীয় জাতের আমের সঙ্গে সঙ্গে এসব সুস্বাদু আমারও সাটুরিয়ার হাট বাজারে দেখা যাবে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে আমবাগান নেই। বসতবাড়ির আশপাশে লাগানো ১০ থেকে ১২ হেক্টর জমিতে আমগাছ লাগানো আছে। আমের ফুল ফোটার আগে ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি মুকুলে ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হয় এবং গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে। এমন ফলন টিকে গেলে তারা বেশ লাভবান হতে পারে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন