প্রশাসনের সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের বিপক্ষে মত দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে তিনি বলেছেন, প্রশাসনের স্বচ্ছতা যাচাইয়ে ধাপে ধাপে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় কুমিল্লা শহরতলির শাসনগাছা বাস টার্মিনালে এক গণ–ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে ২৪-এর শহীদ ও আহত গাজিদের স্মরণে গণ–ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এনসিপির কুমিল্লার জেলা শাখা।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন গত যে তিনটা নির্বাচন হয়েছে, ওই তিনটা নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভোট দিয়েছে প্রশাসন, নির্বাচন পরিচালনা করেছে প্রশাসন। একটা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করার কোনো ধরনের দক্ষতা আওয়ামী প্রশাসনের নেই। এই প্রশাসনের সংস্কার না করা পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। প্রশাসন যতক্ষণ পর্যন্ত একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারে, আমরা আশ্বস্ত হতে পারছি না। এ জন্য আমরা চাই, স্থানীয় সরকার যে নির্বাচনগুলো রয়েছে, এই নির্বাচনগুলোর মধ্য দিয়ে প্রশাসনের স্বচ্ছতার পরীক্ষা হয়ে যাক।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ছাত্র-নাগরিক রাস্তার মধ্যে তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে যে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেছি, আজকে সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে ফায়দা নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য চেষ্টা করছে। আমরা আপনাদের সতর্ক করে দিতে চাই, এই ছাত্র–নাগরিকের হারানোর কিছুই নেই। এক খাপে দুই তলোয়ার যেভাবে থাকতে পারে না, ঠিক একইভাবে ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং এনসিপি থাকতে পারে না।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ৫ আগস্ট গণভবন এবং বঙ্গভবনের যে পরিণতি হয়েছে, যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চাইবে, তাদের পরিণতি এবং তাদের ফলাফল একই রকম হবে। আমাদের লড়াই অব্যাহত আছে। আমাদের লড়াই চলবে। আওয়ামী লীগকে যারা পুনর্বাসন করতে চাইবে, যে রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন তাকে আমরা প্রতিহত করব।
তিনি বলেন, আপনারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করুন। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে যতগুলো উপজেলা রয়েছে সেগুলো নির্বাচনের আয়োজন করুন। আপনারা এই প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন।
তিনি আরও বলেন, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি, মাঠ দখল, পুকুর দখল, বাজার দখল শুরু হয়েছে। এই দখলবাজদের হাত গুঁড়িয়ে দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। কোথাও চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবে না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব রিফাত রশিদের সভাপতিত্বে গণ–ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লার আহ্বায়ক সাকিব হোসাইন, মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান, সদস্যসচিব রাশেদুল হাসান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন