বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বরগুনায় ধর্ষণের শিকার শিশুর বাবাকে হত্যার ঘটনার কম সময়ের মধ্যে বিএনপি ভুক্তভোগী পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছে। বিএনপি নেতারা বলেছেন, পরিবারটির মামলা চালানোর যাবতীয় দায়িত্বভার তারা গ্রহণ করেছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় বিএনপি ও তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ মামলার অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে কাজ করবে জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে বরগুনায় আলোচিত মন্টু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের শিশুদের লেখাপড়া ও চিকিৎসা খরচসহ পরিবারের ব্যয়ভার জামায়াতে ইসলামী বহন করবে বলে ঘোষণা দেন।
জামায়াতের আমির বলেন, বরগুনার মেয়েটির প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। মাগুরার সেই শিশুর মামলাটির মতই এ মামলাটির বিচারও দ্রুত সময়ে করার জন্য সরকারের কাছে আমরাও অনুরোধ করব।
তিনি আরও বলেন, আমি মন্টু দাসের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। খুব খারাপ লেগেছে। নিহত মন্টু দাসের জীবিত অবস্থার কাজকর্ম সম্পর্কে জেনেছি। ছোট ছোট বাচ্চাদের ভরণপোষণ ও লেখা পড়া করার জন্য ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত দলীয় ফান্ড থেকে প্রতিমাসে একটা নির্দিষ্ট হারে তাদের দেওয়া। মাগুরার সেই শিশুর মামলার মতো মন্টু দাসের হত্যা ও মেয়েকে ধর্ষণের মামলার বিচার যেন দ্রুত সম্পন্ন করা হয় সে বিষয়ে আমরা সরকারের অনুরোধ করব।
শফিকুর রহমান দাবি করে বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে এ মামলার রায় বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হোক। আমরা পরিবারটিকে আশ্বস্ত করে বলেছি, আপনারা ভয় পাবেন না, সাহস রাখুন। এ প্রলয়ে মাথা থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকব।
জামায়াতের শীর্ষ এ নেতা বলেন, পরিবারটি এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোটখাট অনেক সহযোগিতা পেয়েছে। কিন্তু খুব অনিশ্চয়তা পেয়ে বসেছে। আমি যখন কথা বলছিলাম, তখন তাদের চোখ পায়রা নদীতে পরিণত হয়েছে। অনবরত চোখের পানি ঝরছিল, কোন ভাষায় আমি তাদেরকে সান্ত্বনা দেব। তারা বলেছে কে আমাদেরকে দেখবে, আমরা বলেছি আমরাও আল্লাহর সৃষ্টি আপনারাও তার সৃষ্টি। আল্লাহ আপনাদেরকে দেখবেন।
পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে তিনি আরও বলেন, আমি শিশুটিকে কোলে নিয়ে বলেছি, এ বাচ্চাদের বেড়ে ওঠা, শিক্ষা, চিকিৎসা, এবং এই পরিবারের ন্যূনতম ব্যয় নির্বাহের পূর্ণ দায়িত্ব মহান আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে জামায়াত ইসলাম গ্রহণ করল। এই শিশুরা বাবার ভূমিকা থাকা অবস্থায় যেমন ছিল তার থেকেও একটু ভালো চলবে ইনশাআল্লাহ। হতে পারে এ শিশুগুলোই একদিন জাতির জন্য সম্পদ পরিণত হবে।
শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে মানবিক ব্যাপারে কোনো দলমতের ব্যাপার নাই। যেখানেই নির্যাতন, যেখানেই জুলুম, সেখানেই আমরা মজলুমের পক্ষে, জালিমের বিরুদ্ধে। আমাদের লক্ষ্যই থাকবে একটি জুলুম বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। একটি দুঃশাসন মুক্ত বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন