বরগুনার আমতলীতে ইসমাইল শাহ মাজারে বাৎসরিক ওরশ চলাকালে হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলায় মাজারের ভেতরের সামিয়ানা ও দুটি বৈঠকখানা পুড়ে ছাই হয়েছে। এতে অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মাজারের খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল এমন অভিযোগ করেছেন।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- সোলায়মান (৩৮), রেজাউল (১৮), বাদল মৃধা (৪০), দুলাল মৃধা (৪২), আবু বকর (২৯), আবুল হোসেন (২৮), আব্দুল্লাহ আল নোমান (২৮), মো. মামুন (৪৩), আবুল কালাম (৪২), জোবায়ের (১৯) ও ফজলুল করিম (২৭)। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি। আহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
‘ইসমাইল শাহ বাবা মাজার’ নামের এ মাজারটি বরগুনা আমতলী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও তিন দিনব্যাপী মাজারে বার্ষিক ওরস হওয়ার কথা ছিল। এজন্য মাজারের সামনে মঞ্চ ও বড় তোরণ নির্মাণ করা হয়েছিল।
এদিকে মাজারের ওরস ঠেকাতে তৌহিদি জনতা কয়েক হাজার লোকজন লাঠি হাতে মিছিল বের করেন। মিছিলটি মাজারের সামনে পৌঁছলে আশপাশের আরও কয়েক গ্রামের মানুষ মিছিলে অংশ নিয়ে মাজারে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয়।
ইসমাইল শাহ মাজারের খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী ও গাজী বায়েজিদের নেতৃত্বে তাদের শতাধিক সমর্থক লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতভাবে মাজারে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়। এতে মাজারের ভেতরের গিলাফ এবং দুটি বৈঠকখানা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী বলেন, এ মাজারটি ভণ্ডের আস্তানা। এখানে ওরশের নামে গানবাজনা ও গাঁজা, মাদক সেবন ও নারীর আসর বসে, যা সম্পূর্ণ ইসলামবিরোধী। আমরা মাজারের খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলকে এই রমজান মাসে অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম কিন্তু তিনি তা শুনেননি। তার নির্দেশে তার ভক্তদের আমরা লোকজনের ওপর হামলা করেছে। এই ভণ্ড মাজারের খাদেম বাবুল উকিল ও তার দোসরদের শাস্তি দাবি করছি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শফিউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন।
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন