কুমিল্লার লাকসামে স্বামীকে আটকে রেখে আওয়ামী লীগ নেতার পরিত্যক্ত বাড়িতে এক গৃহবধূকে দুই দফায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৬ মার্চ) সকালে মামলা করা হলে দিনভর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) লাকসামের পাইকপাড়া এলাকায় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলীর একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর বাড়ি নোয়াখালী।
গ্রেপ্তাররা হলেন- লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৫), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে মো. মাসুদ (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মনির হোসেন হৃদয় (২৩), উত্তর বিনই এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) ও মধ্য লাকসাম এলাকার মৃত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০)।
ওই দম্পতির বরাতে পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) তারা তাদের নানা শ্বশুরবাড়ি লাকসামে যান। পর দিন ভোরে তারা লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার জন্য সিএনজিতে ওঠেন। এ সময় সিএনজিচালক মো. মাসুদ তাদের কাছে জানতে চান তারা স্বামী-স্ত্রী কিনা এবং এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে তিনি তাদের লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যান। এ সময় অভিযুক্তরা তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে। পরে পরিকল্পিতভাবে তাদের পাশের লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে তার স্ত্রীকে অপহরণ করে লাকসামে নিয়ে যায়।
পুলিশ আরও জানায়, পরে ভিকটিমকে লাকসামের পাইকপাড়া এলাকায় সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলীর একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ভিকটিমকে লাকসাম পৌরশহরের ৮নং ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় আসামিদের পরিচিত বিলকিছ আক্তার কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে আবারও ধর্ষণ করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ওই গৃহবধূ উদ্ধার হন। এ ঘটনায় রোববার লাকসাম থানায় মামলা করেন ওই নারীর মা।
পুলিশ আরও জানায়, ওই গৃহবধূ বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন আছেন।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রোববার দিনভর অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ) তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন