কিশোরগঞ্জের ভৈরবে টিকটকে আসক্ত কিশোরীকে মোবাইল চালাতে মা বাধা দেওয়ায় ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের কান্দিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ওই দিন রাত ১১টায় মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
নিহত কিশোরী ওই এলাকার মেরাজ মিয়ার মেয়ে মিনা বেগম (১৭)। তথ্যটি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানী।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কিশোরী মিনা দীর্ঘদিন ধরে টিকটকে আসক্ত। পরিবারে চার বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। গতকাল শনিবার রোজা রেখেছিল। এমনকি সে কোরআন শরির পড়তো। দুপুরে মায়ের সঙ্গে ঘরের কাজকর্ম নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে গোসল করে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ ঘরে দলনার সঙ্গে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে৷ মিনার দাদু নামাজ পড়তে ঘরে গিয়ে দেখে সে ফাঁসিতে ঝুলে আছে। এসময় পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে নামিয়ে মাথায় পানি দেয়। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির পাশে একটি ফার্মেসিতে নিয়ে গেলে সেখানে ফার্মাসিস্ট জানান সে মৃত্যুবরণ করেছে।
এ বিষয়ে নিহতের বড় বোন নুসরাত জাহান বলেন, আমার বোন অনেক দিন আগে থেকেই টিকটকে আসক্ত ছিল। আমি বাধা দিলে টিকটক চালনো বন্ধ করে দিয়েছিল। আবারো সে মোবাইলে আসক্ত হয়ে যায়। দুপুরে মা মোবাইল রেখে ঘরের কাজ কর্ম করতে বলে। এসময় মায়ের সঙ্গে মিনার ঝগড়া হয়। আমার চাচাতো ভাই সাদ্দাম তাকে শাসন করে। পরে সে গোসল করে বাড়ির উঠোনে হাঁটাহাঁটি করে। বিকেলে ঘরে ঢুকে দলনার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। আমার বোন সারাদিন রোজা রেখেছিল। সকালে কোরআন শরীফ পড়েছে। আমরা ভেবেছিলাম সে বিকেলে আসরের নামাজ পড়তে ঘরে ঢুকেছিল। পরে আমার দাদু নামাজ পড়তে গিয়ে দেখে মিনা ফাঁসিতে ঝুলে আছেন।
এ বিষয়ে নিহতের বাবা মেরাজ মিয়া বলেন, আমার মেয়ে টিকটকে বেশি আসক্তির কারণে এর আগেও মোবাইল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। মাস খানেক আগে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। পরে তাকে আবারো মোবাইল দেই। শনিবার দুপুরে সে মোবাইল চালাচ্ছিল। তার মা রাজিয়া বেগম তাকে মোবাইল টিপতে বাধা দেওয়ায় ও ঘরে কাজ কর্মের কথা বলায় মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে। পরে বিকেলে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানী কালবেলাকে বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। পরিবারে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্য করুন