রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত প্রয়োজন এবং জমি বিক্রির জন্য বায়না নিয়ে আত্মসাতেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই কর্মকর্তার ভাইয়ের বিরুদ্ধেও।
ভুক্তভোগীরা রোববার (১৬ মার্চ) সকালে নগরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেছেন।
ওই কর্মকর্তার নাম মানিকুজ্জামান মানিক। তিনি রুয়েটের সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব)। তার ভাইয়ের নাম মুনজুরুজ্জামান মুন। তিনি রাজশাহীর একজন হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী। মাহাবুবুর রহমান সঞ্জু, শাহি, নওবাহার খাতুন, তামান্না ইয়াসমিন, আশরাফ উজ জামান ও মামুনুর রশিদ নামের ছয়জন এ সংবাদ সম্মেলন করেন। তাদের বাড়ি নগরের সাধুর মোড়, তালাইমারি ও কাজলা এলাকায়। তারা প্রত্যকেই পাওনাদার বলে জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মানিকুজ্জামান মানিক বিভিন্ন সময়ে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও চেকের বিপরীতে ১৫ লাখ টাকা ও তার বড় ভাই রাজশাহী হার্ডওয়্যারের স্বত্ত্বাধিকারী মুনজুরুজ্জামান মুন দুই লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তারা টাকা ফেরত চাইতে গেলে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অপমান করে তাড়িয়ে দেন। তাই তারা সংবাদ সম্মেলন করছেন।
মাহাবুবুর রহমান সঞ্জু জন্ম থেকে একজন প্রতিবন্ধী। তিনি অভিযোগ করেন, রুয়েট কর্মকর্তা মানিকুজ্জামান মানিক চলতি বছরের ১০ জানুয়ারী নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ব্যবসায়িক প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে নগদ ৬ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেন। এখন তা ফেরত দিচ্ছেন না।
অন্য আরেক ভুক্তভোগী আশরাফ উজ জামানের কাছে জমি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলেন মানিক। ২০২১ সালে একটি বায়নানামা দলিল করে ৬ লাখ টাকা বায়না নিয়েছেন। এ পর্যন্ত জমি দেননি, টাকাও ফেরত দেননি।
ভুক্তভোগী মামুনুর রশিদ অভিযোগ করেন, ব্যবসায়িক বিশেষ প্রয়োজনের কথা বলে একটি চেকের বিপরীতে তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নেন মানিক।
নওবাহার খাতুন অভিযোগ করেন, রুয়েটে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মানিকুজ্জামান মানিক চেকের বিপরীতে দেড় লাখ ও তার ভাই মুন এক লাখ টাকা নেন। নওবাহার খাতুনের মেয়ে তামান্না ইয়াসমিনের কাছে থেকেও তার স্বামীর চাকরির জন্য এক লাখ টাকা নেন মানিক। এছাড়া তামান্নার স্বামী শাহির কাছ থেকেও নেন ৫০ হাজার টাকা। দীর্ঘ সময়েও তিনি চাকরি দিতে পারেননি, টাকাও ফেরত দেননি।
তামান্না বলেন, তিনি ও তার স্বামী শাহি গত বছরের ৩ জুন মানিকের বড় ভাই মুনজুরুজ্জামান মুনের কাছে টাকা চাইতে গেলে তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধর করা হয়। এমনকি পুলিশ দিয়েও হয়রানির চেষ্টা করা হয়। পরে এ ব্যাপারে তামান্না থানায় জিডি করেন। জিডির তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুয়েট কর্মকর্তা মানিকুজ্জামান মানিক বলেন, ‘তারা টাকা পাবে তা অস্বীকার করছি না। তবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিইনি। ব্যক্তিগত প্রয়োজনেই নিয়েছিলাম। সঞ্জু থানায় অভিযোগ করেছিল, তার টাকা থানার মাধ্যমে দিয়ে দিচ্ছি। আশরাফও আরেক থানায় অভিযোগ করেছেন। সেটাও থানার মাধ্যমে দিয়ে দেব। আরও যারা পাবে, তাদের সবাইকেই টাকা দিয়ে দেব। এটা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের দরকার ছিল না’।
মন্তব্য করুন