লালমনিরহাটে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে মোবাইল ফোনে কুপ্রস্তাব দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন রবিউল আলম নামে এক কলেজ অধ্যক্ষ। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই পরীক্ষার্থীর বাবা।
অভিযুক্ত রবিউল আলম লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ভুক্তভোগী ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী এবং ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই পরীক্ষার্থীর বাবা নদীভাঙনকবলিত দিনমজুর হওয়ায় তার ফরম পূরণের টাকা কিছু কমানোর জন্য অধ্যক্ষ রবিউল আলম বরাবর আবেদন করেন। তখন ওই শিক্ষার্থীকে অধ্যক্ষ রবিউল তার মোবাইল নম্বর দিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন।
গত ৯ মার্চ ইফতার ও নামাজের পরে মা ও বড় বোনের সামনে মোবাইল ফোনের লাউড স্পিকার চালু করে অধ্যক্ষ রবিউল আলমকে ফোন করে ফরম পূরণের বিষয়ে জানতে চায় ওই শিক্ষার্থী। তখন অধ্যক্ষ মেয়েটির পরিচয় পাওয়ার পর তাকে রাতে দেখা করতে বলেন। মেয়েটি প্রতি উত্তরে বলে, ‘আমি মেয়ে মানুষ, রাতে কীভাবে দেখা করি’। তখন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘এখনিতো তোমার দেখা করা উচিত, কারণ আমি এখন রোজা নাই’। মেয়েটি এ কথা শোনার পর লজ্জিত হয়ে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন বলে লিখিত ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে দিনমজুর বাবা বলেন, ‘আমি তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার খেটে খাওয়া একজন দিনমজুর মানুষ। তাই পরীক্ষার ফরম পূরণে কিছু টাকা কম নেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। অধ্যক্ষ এই সুযোগে আমার মেয়েকে কু-প্রস্তাব দিয়েছে। জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিলাম দেখি তিনি কী করেন’।
ভুক্তভোগী ওই এসএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, এমন ন্যক্কারজনক কাজের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সহপাঠীদের নিয়ে রাস্তায় নামব।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে ওই অধ্যক্ষের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে বাড়িতে, অফিসে কোথায় পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ রবিউল আলমের মন্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইলে নম্বরে কল করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার কালবেলাকে বলেন, বিষয়টির কার্যকর ব্যবস্থা নিতে লালমনিরহাট পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন