ফেনী সদরে যৌতুক না পেয়ে মারজান আক্তার ঝুমুর নামের এক নববধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ মার্চ উপজেলার কালীদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই নববধূকে পেটানোর পর আহত হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
সবশেষ শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে মৃত্যুর কাছে হার মানেন ওই নববধূ। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই পুলিশ এজহারভুক্ত আসামি ঝুমুরের শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার এজাহার ও নববধূর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিকভাবে বিগত ৮ ডিসেম্বর ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ গোবিন্দপুর এলাকার কামু ভূঞা বাড়ির প্রবাসী ছায়েদুর রহমান তৌহিদের সঙ্গে সোনাগাজীর আলমপুরের ঝুমুরের বিবাহ হয়। স্বল্প পরিসরে বিয়ের পর ঝুমুরের স্বামীর পরিবারের আপত্তির কারণে বিগত ২৭ ফেব্রুয়ারি বড় আয়োজন করে ২ শতাধিক লোককে দাওয়াত করে খাওয়ানো হয়।
ওই অনুষ্ঠানের পর ঝুমুরের স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন ৩ লাখ টাকা ও ৫ ভরি সোনা যৌতুক দাবি করে। কিন্তু ঝুমুরের নির্মাণ শ্রমিক বাবার পক্ষে তা অসম্ভব হওয়ায় নববধূ ঝুমুরের উপর নির্যাতনের খড়্গ নেমে আসে। ৪ মার্চ সকালে এসব বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে স্বামী তৌহিদ, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি বিবি হাজেরা একত্রিত হয়ে ঝুমুরকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। অবস্থা বেগতিক দেখে স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঝুমুরের মা ফরিদা আক্তার জানান, খবর পেয়ে মেয়েকে দেখতে আমরা চট্টগ্রাম হাসপাতালে যাই। সেখানে মেয়ের মুখে নির্যাতনের বিস্তারিত জেনে বুধবার (১২ মার্চ) ফেনী মডেল থানায় মেয়ের জামাই তৌহিদ, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি হাজেরাকে আসামি করে আমার স্বামী আবদুল আলিম বাদী হয়ে মামলা করে। শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে আমার মেয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
ফেনী মডেল থানার ওসি তদন্ত ইকবাল হোসেন কালবেলাকে জানান, নববধূকে নির্যাতনের ঘটনায় তার শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন