লালমনিরহাট সদরে চড়া সুদে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য দাদন ব্যবসায়ীদের রাতভর নির্যাতনের শিকার হওয়া এক দিনমজুরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্বপন কুমার নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো দু-তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মজিবর ।
নিহত দিনমজুরের নাম ফারুক হোসেন। তিনি পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কিসামত নগরবন্দ গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও বড়বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পাশের দিনাদলি সুবারবাড়ির গ্রামের এরশাদ হোসেন, সুবাস চন্দ্র ও মুকুল চন্দ্র দাদন ব্যবসা করেন। এর সুদ সবাই ভাগবাটোয়ারা করে নেন। তাদের গ্রামে বসবাস করতেন দিনমজুর ফারুক। অভাবের সংসারে খরচ জোগাতে তিনি এরশাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার, সুবাসের কাছ থেকে ২০ হাজার ও মুকুলের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চড়া সুদে ঋণ নেন। যার অধিকাংশই পরে পরিশোধ করেন। এরপরও সুদ-আসলে ২ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি।
চক্রের চাপে তিন মাস আগে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে যান দিনমজুর ফারুক। তিনি স্ত্রী-সন্তানকে দেখতে গত বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বাড়িতে পৌঁছানোর আগেই পথ থেকে তাকে আটকে নিজেদের আস্তানায় নিয়ে যান দাদন ব্যবসায়ীরা। সেখানে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
খবর পেয়ে ফারুকের স্ত্রী রাশিদা বেগম আস্তানায় গিয়ে স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন; কিন্তু কিছুতেই মন গলেনি চক্রটির। নিরুপায় হয়ে স্বামীকে চক্রের কাছে রেখে নিজের কাজে ফেরেন স্ত্রী।
পরদিন শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাঁশবাগানে ফারুকের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি নুরনবী কালবেলাকে বলেন, মামলার দুই নম্বর আসামি স্বপন কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন