নাটোরের সিংড়ায় আটক গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। লিখিত মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া জব্দ টাকা কোর্টে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসমাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সন্দেহভাজন হিসেবে প্রাইভেটকারটি তল্লাশি চালিয়ে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে গাড়িতে থাকা ছাবিউল ইসলাম ও গাড়ির চালককে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্তের জন্য ডাকলে যে কোনো সময় হাজির হতে বাধ্য থাকবেন তিনি। পুরো বিষয়টি উদঘাটন করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ২টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্টে তল্লাশি করা হয়। এ সময় প্রাইভেটকারে থাকা ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। পরে টাকা ও প্রাইভেটকারটি জব্দ করে গাড়ির আরোহী প্রকৌশলী পরিচয় দেওয়া ছাবিউল ও চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম দাবি করেন, পুলিশরা এক প্রকার পাগলামি করেছে সেদিন রাতে। পরিচয় ও সঠিক তথ্য দেওয়ার পরও তারা হয়রানি করেছে। দাদা বাড়ির জমি বিক্রি ও বেতনের বৈধ টাকা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে তল্লাশির নামে পুলিশ তাকে আটক করে। বর্তমানে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসায় অবস্থান করছেন তিনি। আগামীকাল রোববার (১৬ মার্চ) অফিস করবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আটকের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যেহেতু বিষয়টি দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে দেখছে। সে কারণে তদন্তেই ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন হবে বলে আশা রাখি।
এদিকে, রাতের আঁধারে বিপুল পরিমাণ টাকাসহ ছাবিউল ইসলাম পুলিশের হাতে আটকের খবর গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে অস্বাভাবিক পরিমাণ নগদ টাকা নিয়ে ভ্রমণ ও টাকার উৎস নিয়েও নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয় জেলাজুড়ে।
অনেকেই বলছেন, ছাবিউল ইসলাম ঠিকাদারের কাছে কমিশন বাণিজ্য আর ঘুষের টাকা প্রতি সপ্তাহে পাচার করে বাড়িতে নিয়ে যান। টানা ২০ বছরে গাইবান্ধায় চাকরিতে ঠিকাদারসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে দুর্নীতি ও ঘুষবাণিজ্য করে আসছেন তিনি। তার দুর্নীতি খতিয়ে দেখাসহ অর্থের উৎস ও কি পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন তা অনুসন্ধানের জোর দাবি জানিয়েছে জেলাবাসী।
মন্তব্য করুন