সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ঈদের কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত অটোরিকশায় এক কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিরাই-শান্তিগঞ্জ সড়কে এ ঘটনাটি ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
দিরাই থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সিএনজি চালক মোহাম্মদ ইমন খান (২৩) ও যাত্রী মো. মিঠু মিয়া (২৫)। গ্রেপ্তার দুজন দিরাই উপজেলার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান শেষে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। অভিযানে শুক্রবার রাতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ও অপর যাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে এবং অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুনামগঞ্জ সদর সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে ভর্তি ভিকটিমের খোঁজখবর নেন এবং ভিকটিমের সাথে কথা বলেন। ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করার মাধ্যমে অন্যান্য আসামি গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
দিরাই থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চলন্ত অটোরিকশায় এক কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাকি আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ঈদের কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি যাওয়ার পথে চলন্ত অটোরিকশায় এক কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা করেছে দুই যুবক। কিশোরী নিজেকে বাঁচাতে অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তি কিশোরী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছু কাপড় কেনার জন্য তারা তিনজন দিরাই পৌর শহরে যান। অন্য দুজনের কেনাকাটা শেষ হওয়ায় তারা আগেই চলে যায়। এরপর নিজের কেনাকাটা শেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ভুক্তভোগী ওই কিশোরী বাড়িতে যাওয়ার জন্য দিরাই বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ানো একটি অটোরিকশায় ওঠেন। সেখানে তখন মানুষের ভিড় বেশি ছিল। এ সময় আরও দুই যুবক ওই অটোরিকশার দুই দিকে উঠে পড়ে। এরপরই চালক অটোরিকশা চালিয়ে দেয়।
কিছুদূর যাওয়ার পরই তিনি দেখতে পান অটো সুনামগঞ্জ শহরের দিকে যাচ্ছে। তখনই অটোরিকশা থামাতে বলেন চালককে। এই কথা বলার পরই পাশে থাকা দুজন তাকে ঝাপটে মুখ চেপে ধরে। সঙ্গে থাকা মোবাইল কেড়ে নেয়। তখন মেয়েটি তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে। এভাবে ধস্তাধস্তির একপর্যায় অটোরিকশা দিরাই-মদনপুর সড়কের গণিগঞ্জ এলাকায় আসে। এই সময় জোরে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে কোনো রকমে ছাড়িয়ে মেয়েটি চলন্ত অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়।
মন্তব্য করুন