সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার পর এক পক্ষের বোরো জমির কাঁচা ধান গাছ কেটে নিয়েছেন অপর পক্ষের বিএনপি নেতা ও তার স্বজনরা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের কাউয়াজুরি এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার ও গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঠাকুরভোগ গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নূর মিয়া ও তার মামাতো ভাই সিলেট জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শিহাব খানের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুফি মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদাল মিয়ার লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রাম্য শিরনির আয়োজন ও বাড়ির পাশের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র কর দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেন উভয়পক্ষ।
সম্প্রতি প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করতে বিএনপি নেতা নূর মিয়া ও শিহাব খানের লোকজন প্রতিপক্ষ সুফি মিয়া ও আবদাল মিয়ার পক্ষের শিবলু মিয়ার দেড় বিঘা বোরো জমির কাঁচা ধান কেটে নিয়ে গেছে। গরু দিয়েও কিছু ধান খাওয়ানো হয়।
ভুক্তভোগী শিবলু মিয়ার পক্ষের লোক হাবিবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার ও প্রতিপক্ষের ভয়ে আমরা ঘরবাড়ি ছাড়া। আমি বর্তমানেও একটি প্রাইভেট হসপিটালে চিকিৎসা নিচ্ছি, এই সুযোগে নুর মিয়া ও শিহাব খানের লোকেরা আমাদের বাড়িঘরে হামলা করছে। হাওর থেকে জমির কাঁচা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের পক্ষের শিবলু মিয়ার অনেক ধান গাছে কেটে নিয়ে গেছে। দিনেদুপুরে জোরপূর্বক গরু দিয়া জমির ধান নষ্ট করা হচ্ছে, আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
ভুক্তভোগী শিবলু মিয়া বলেন, আমাদের প্রায় দেড় বিঘা জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। প্রতিদিন গরু দিয়ে তা খাওয়ানো হচ্ছে। বাড়িঘরে লুটপাট করেছে নূর মিয়ার লোকজন। আমাদের কাছে সবকিছুর প্রমাণ আছে। আমরা এর বিচার চাই।
অভিযোগটি মিথ্যা দাবি করে ছাত্রদল নেতা শিহান খান বলেন, হাওরে কাঁচা ধান কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। হয়ত কারও গরু ধান খেয়েছে বা হাওরে ঘাস কাটতে যাওয়া লোকেরা ধান কেটে নিয়ে গেছে। আমাদের কেউ তাদের কাঁচা ধান কেটে আনেনি। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
বিএনপি নেতা নূর মিয়ার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও ফোন রিসিভ হয়নি।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মো. আকরাম আলী কালবেলাকে বলেন, বোরো জমির কাঁচা ধান গাছ কেটে নিয়েছেন বিএনপি নেতা ও তার স্বজনরা বলে শুনেছি। ঠাকুরভোগ গ্রামের মসজিদের টাকাসহ নানা বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জেরে গেল মাসে মারামারি হয়েছে। দু’পক্ষ থানায় মামলা দায়ের করেছে। প্রতিপক্ষের লোকজন হাওর থেকে বোরো জমির কাঁচা ধান কেটে নেওয়ার বিষয়ে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন