ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, যাদের মধ্যে হাসিনার চরিত্র ফুটে উঠবে, যাদের মধ্যে ফ্যাসিজম তৈরি হবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী কলেজের রজনীকান্ত সেন মঞ্চে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। ১১ মার্চ ছাত্রশিবিরের শহীদ দিবস উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবির এই আলোচনা সভা ও কোরআন বিতরণের আয়োজন করে। পরে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রীর মাঝে কোরআন বিতরণ করা হয়।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, শহীদ সাব্বির, শহীদ আইয়ুব কী অপরাধ ছিল তাদের? তারা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিল। তারা সমাজের ছাত্রদের ভালো কাজের দিকে আহ্বান করে, এটাই তাদের অপরাধ। তাদের এই আহ্বানে সকল ছাত্ররা যখন সাড়া দিচ্ছে, তাদের অপকর্ম তো আর চলে না সমাজে-ক্যাম্পাসে। এটাই ছিল বাস্তবতা।
শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম প্রসঙ্গে ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, কী ছিল তাদের অপরাধ? তারা বলেছিল কোটা ব্যবস্থা সংশোধন করতে হবে, তাদের যথেষ্ট লজিক ছিল। কিন্তু না, মানবো না। দেশ আমার, আমার বাবার দেশ, আমার ভাইয়ের দেশ, আমার দেশ, যা ইচ্ছা তাই করব। দেশ তো কারো বাপের হয় না। এরপর আমাদের (আন্দোলনকারী) ওপর নির্যাতন চালালো, ওবায়দুল কাদের বলছেন, ‘ছাত্রলীগই যথেষ্ট’। আরবের সময় সেই মানুষগুলোও বলতো, ‘আমাদের উদবারাই যথেষ্ট, আবু জেহেলরাই যথেষ্ট, কীসের এ সমস্ত বেলাল, সুমাইয়া, আম্মার ইবনে ইয়াসার, আবু বকর, এদের কোনো দাম নাই।’
তিনি আরও বলেন, অতীত আর বর্তমান নিয়ে বসে থাকলে ভবিষ্যৎ আর গড়ে তুলতে পারবো না। আমাদের নিয়ে হাসি তামাশা করেছে। অতীতেও করেছে, এখনও করে। ১৯৮২ সালে যারা আমাদের ভাইদের হত্যা করে মনে করেছিল ছাত্রশিবির নিঃশেষ হয়ে গেছে, ইসলামী আন্দোলন এখানে নিঃশেষ হয়ে যাবে, ইসলামের কথা বলার জন্য এখানে কোনো মানুষ থাকবে না। শাহবাগ তৈরি করে তারা মনে করেছিল বাংলাদেশকে তারা গিলে খেয়ে ফেলেছে। তারা মনে করেছিল এই বাংলাদেশে ন্যায়ের পক্ষে, হকের পক্ষে কথা বলার জন্য আর কোনো মানুষ থাকবে না। কিন্তু মানুষ অবশিষ্ট ছিল, যেটা ২০২৪ এই প্রজন্ম প্রমাণ করে দেখিয়েছে।
জাহিদুল বলেন, কোরআনের তাৎপর্যই হচ্ছে সমাজে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। দুনিয়ার মানবীয় কোনো মতবাদ দিয়ে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত কেউ শতভাগ ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বরং মানবীয় মতবাদ নিজেই নিজের সাথে দ্বিমতে চলে যায়। কিন্তু কোরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিল হওয়ার কারণে এই কোরআন দিয়ে বাংলাদেশের সব জায়গায় শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সত্যিকার অর্থে জুলাই বীর শহীদ-গাজীদের রক্তের দায় শোধ করতে চাইলে কোরআনকে ধারণ করে আগামী দিনে বাংলাদেশে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই শহীদ আলী রায়হান, আবু সাঈদ, শান্ত, মুগ্ধদের আত্মা শান্তি পাবে।
অনুষ্ঠানে নগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামীম উদ্দিনের সভাপতিত্ব বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় তথ্য ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহ হোসাইন আহমেদ মেহেদী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইমরান নাজির।
মন্তব্য করুন