প্রথম স্ত্রীকে খুশি করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেন স্বামী। বেড়ানোর কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে নিজ ভ্যানযোগে বাড়ি থেকে বের হন স্বামী। পথিমধ্যে পানের সঙ্গে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে নির্জন স্থানে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় দেহ থেকে মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করেন। পরে বিচ্ছিন্ন মাথা একটি তামাক ক্ষেতে পুঁতে রাখেন স্বামী।
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাটে গৃহবধূ হাসিনা বেগম হত্যার বিষয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।
তরিকুল ইসলাম বলেন, ৫ মার্চ দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাতের আঙুলের ছাপ থেকে রংপুরের সিআইডি পুলিশ নিশ্চিত করে, মরদেহটি জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর দীঘলটারী গ্রামের আশরাফুলের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা বেগমের (৩৮)।
ঘটনার পর থেকে নিহত হাসিনা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলাম ও তার প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসা (৪৫) পলাতক ছিল। শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেলে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসাকে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেয়। পরে শনিবার মেহেরুন্নেসা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তার সতিন হাসিনা বেগমের বিচ্ছিন্ন মাথা পুঁতে রাখার তথ্য দেন। সেই তথ্য মতে জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি তামাকক্ষেতে পুঁতে রাখা হাসিনার বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্বামী আশরাফুল ইসলাম পেশায় ভ্যানচালক। তিনি জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর দীঘলটারী গ্রামের বাসিন্দা ও সদর উপজেলার চর কুঠীরপার গ্রামের নবাব আলীর ছেলে। নিহত হাসিনা বেগম আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং আদিতমারী উপজেলার দীঘলটারী গ্রামের কাশেম আলীর মেয়ে। এদিকে রোববার বিকেলে থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল শহরের খুটামারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত স্বামী আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত আশরাফুলকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, নিহত হাসিনা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলাম চর কুঠীরপার গ্রামের নবাব আলীর ছেলে। এক কন্যা সন্তানসহ বিবাহ বিচ্ছেদ হয় হাসিনার। পরে দিঘলটারী গ্রামের নুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। সেখানেও এক কন্যা সন্তান হলে দ্বিতীয় স্বামীর সংসার ছেড়ে পুনরায় প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে আসেন হাসিনা। পরে আবারও হাসিনার এক কন্যা সন্তান হয়।
মন্তব্য করুন