ঝিনাইদহে ইজিবাইক চুরির অপবাদে মিলন শেখ নামে এক যুবদলকর্মীর হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর ওবায়দুর রহমান গা ঢাকা দিয়েছেন।
শনিবার (৮ মার্চ) রাতে মিলনের স্ত্রী বাদী হয়ে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর পূর্ব পাড়া (নিকারীপাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত যুবদলকর্মী মিলন শেখ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খাজুরা জোর্য়াদ্দারপাড়া গ্রামের মৃত ইমান আলী শেখের ছেলে এবং পেশায় ইজিবাইক চালক। শনিবার রাতে নির্যাতনের শিকার মিলন এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় ওবায়দুর রহমান ও তার ছেলে চঞ্চলের নামে অভিযোগ দিয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়ায় চালিত ইজিবাইক রেখে যোহরের নামাজ পড়তে মসজিদে যান যুবদলকর্মী মিলন। নামাজ শেষে ফিরে দেখেন ইজিবাইকটি নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ইজিবাইক না পেয়ে ইফতার শেষে তিনি ইজিবাইকের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক কাউন্সিলর ওবায়দুর রহমানের কাছে গিয়ে চুরির ঘটনা খুলে বলেন। এ সময় ওবাইদুর ও তার ছেলে চঞ্চল ইজিবাইক চালক মিলন শেখকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এতে মিলন শেখের দুই হাত, এক পা ও গলার হাড় ভেঙে যায়। চিৎকার শুনে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ আড়াইশো বেড হাসপাতালে ভর্তি করেন।
শনিবার এ ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত ওবায়দুর রহমান ও তার ছেলে চঞ্চল রহমান গা ঢাকা দিয়েছেন। এদিকে আহত ইজিবাইক চালককে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শেখরসহ দলের নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস বলেন, ‘মিলনের ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি একজন সৎ ও পরিশ্রমী মানুষ। আমি এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি করছি।’
তিনি বলেন, ‘দলের ক্রান্তিকালে মিলন রাজপথে থেকে ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। তবে নিজের জন্য এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারেনি। ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাতো। তিনি আহত যুবদলকর্মীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করার ঘোষণা দেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুর রহমান ও তার ছেলের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন কালবেলাকে জানান, শনিবার রাতে মিলনের স্ত্রী বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের আটকের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন