টাঙ্গাইলে ১০ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় গ্রাম্য সালিশে দেড় লাখ টাকা জরিমানা ও জুতার বাড়ি দিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ন্যাক্কারজনক এই ধর্ষণের ঘটনা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের। প্রায় ২৫ দিন আগে উক্ত ঘটনার সালিশে অর্থদণ্ডের মাধ্যমে ধামাচাপার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর স্বজনদের।
এ ঘটনায় শনিবার (৮ মার্চ) ভুক্তভোগী শিশুটির মা মির্জাপুর থানা একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত ফিরোজ মিয়া (৪৫) ওই এলাকার নওসের মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন সিএনজিচালক।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনাটি ভুক্তভোগীর বাড়ির পাশে নানির বাড়িতে। সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতেন ভুক্তভোগী শিশুসহ স্বজনরা। ঘটনার দিন নানির বাড়ি বেড়াতে যান ভুক্তভোগী। তখন ওই গ্রামের ফিরোজ মিয়া কৌশলে তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে একটি টয়লেটের ভিতর ধর্ষণ করে। ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে মেয়েটি কান্নাকাটি করায় তাকে জিজ্ঞেস করা হলে সে তার সঙ্গে ঘটনার বর্ণনা দেন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বেশ কয়েকজন মাতব্বর মীমাংসার ধামাচাপা দেন।
ভুক্তভোগী ওই শিশুটির মা জানান, আমার স্বামী প্রবাসে থাকায় আমি অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছি। স্থানীয়রা বিষয়টি সুষ্ঠু একটি মীমাংসা করে দেবেন এমন আশ্বাসের কারণে কোথাও অভিযোগ করিনি। ঘটনার দীর্ঘদিন পর বিচার করে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে জুতার বাড়ি ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন।
তিনি আরও জানান, দেড় লাখ টাকা জরিমানা করলেও আমি পেয়েছি মাত্র ৯২ হাজার টাকা। বাকি টাকা না কি পরে দিবে বলেছে তারা।
স্থানীয়রা জানান, ধর্ষণ করার পর তার শাস্তি দেড় লাখ টাকা হতে পারে না। এটা অন্যায়। তাও আবার বাকি। বিষয়টা হাস্যকর হলেও সত্য। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সহযোগিতা করেছেন ও ধর্ষণের বিচার করেছেন ভুক্তভোগী শিশুটির প্রতিবেশী নুর ইসলাম, বিএনপির নামধারী নেতা ইউনুস আলী, আলম হোসেন, খোরশেদ আলম, আব্দুল মালেক মিয়াসহ প্রমুখ।
স্থানীয়রা বলছেন, অভিযুক্ত ধর্ষকসহ যারা তাকে বাঁচানোর জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। এজন্য উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এই বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাটি আমি পরস্পর শুনেছি। পরে শুনলাম ওরা নিজেরাই আপোস মীমাংসা করেছে।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন জানান, এ ব্যাপারে শনিবার দুপুরে বেশ কয়েকজনের নামে ভুক্তভোগীর মা একটি মামলা দায়ের করেছে। ধর্ষকসহ অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পারব।
মন্তব্য করুন