হাতিয়ায় এক প্রবাসীর বাড়িতে জোরপূর্বক গাছ কেটে মাটি ভরাট করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে জামশেদ উদ্দিন নামের স্থানীয় প্রভাবশালী এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী প্রবাসী এমরান উদ্দিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত জামশেদ উদ্দিন জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে। সে জাহাজমারা ইউনিয়নের জামায়াত ইসলামীর রুকন।
জানা গেছে, জাহাজমারা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে এমরান উদ্দিন অনেক দিন থেকে সৌদি আরবে প্রবাসী। প্রবাস জীবন থেকে কষ্ট সাধ্য উপার্জন করে নিজ গ্রামে ১৫.৪৮ শতাংশ জমির বাড়ি ক্রয় করে বসবাস করে আসছেন। গতকাল (শুক্রবার) সকালে জামশেদ নিজ নামের ক্রয়কৃত জমির অংশ প্রবাসী এমরানের বাড়ির অংশে রয়েছে বলে দাবি করেন। সেই মোতাবেক জামশেদ লোকবল নিয়ে প্রবাসী এমরানের বাড়ি থেকে নারকেল গাছসহ অন্যান্য গাছ কেটে পাওয়ার ট্রিলারে ভর্তি করে নিয়ে যায়। পরে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ভরাট করে। এসময় প্রবাসীর বাবা আমির হোসেন বাঁধা দিতে গেলে আসামিদের হাতে থাকা দা কুড়াল খন্তা হাকাইয়া মারমুখী হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং নানাভাবে হেনস্তা করে। ভুক্তভোগী প্রবাসীর বাবা বাদী হয়ে হাতিয়া আদালতে ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ঘটনার দিন এমরান উদ্দিন প্রবাস থেকে মোবাইলে আসামিগণকে বারবার নিষেধ করলেও আসামিরা তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং উল্টো চাঁদা দাবি করে। এমতাবস্থায় এমরান সৌদি আরবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কাছে দেশের বাড়িতে জোর করে জমি দখলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ও পরিবারের নিরাপত্তা গ্রহণের আবেদন করেন। বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের শ্রম কাউন্সেলর নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনটির আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করেন।
অভিযুক্ত জামায়াত নেতা জামশেদ উদ্দিন বলেন, আব্দুর রহিমের থেকে এই জায়গা আমি কিনেছি। আমি আমার জায়গা থেকে গাছ কেটেছি এবং আমার জায়গায় মাটি ভরাট করেছি। কারো কোনো জায়গা আমি দখল করিনি।
জমি বিক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, আমি এই জায়গা প্রবাসী এমরান উদ্দিনের কাছে বিক্রি করেছি। আর জামশেদ উদ্দিনের কাছে যেটা বিক্রি করেছি সেটা এই সীমানার উত্তর পাশে। কিন্তু জামসেদ জোর করে এমরানের সীমানায় ঢুকে গাছ কেটে মাটি ভরাট করে দখল করার চেষ্টা করে।
স্থানীয় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এমরান উদ্দিন তার ক্রয়কৃত জায়গায় ভোগ দখলে আসছে। হঠাৎ করে জামশেদ লোকজন নিয়ে এসে গাছ কেটে মাটি ভরাট করে জায়গা দখলের চেষ্টা করে। সন্ত্রাসী কায়দায় এভাবে জোরপূর্বক জায়গা দখল আইন সংগত হয়নি।
এ বিষয়ে হাতিয়া থানা জামায়াতের আমির মাস্টার বোরহানুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে আমি জেনেছি। এটি তদন্ত করার জন্য আমাদের সাংগঠনিকভাবে একজন প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ শনিবার (৮ মার্চ) রাতে কালবেলাকে জানান, প্রবাসীর অভিযোগের বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন