লালমনিরহাটে ভুট্টাক্ষেত থেকে গৃহবধূ হাসিনা বেগমের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধারের তিন দিন পর সেই দ্বিখণ্ডিত মাথা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (০৮ মার্চ) দুপুরে আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের নামাটারী কুটিবাড়ী এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ড থেকে দ্বিখণ্ডিত মাথাটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গৃহবধূ হাসিনা বেগম (৩৮) আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দীঘলটারী গ্রামের ভ্যানচালক আশরাফুলের প্রথম স্ত্রী। তিনি ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার দড়িবস গ্রামের মৃত কাশেম আলীর মেয়ে। ঘটনার পর থেকে স্বামী আশরাফুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত হাসিনা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহেরুন নেছার (৪৫) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের নামাটারী কুটিবাড়ী এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অভিযান চালায় পুলিশ৷ পরে ওই সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডের মাটির নিচে পুঁতে রাখা মাথাটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ এলাকার একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে হাসিনা বেগমের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ ওই গৃহবধূর পরিচয় শনাক্ত করে তার স্বামী বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রক্তমাখা পোশাক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে ভ্যানচালক স্বামী আশরাফুল ইসলাম।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, নিহত হাসিনা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলাম চর কুঠীরপার গ্রামের নবাব আলীর ছেলে। নিহত হাসিনার প্রথম স্বামী আশরাফুলের সঙ্গে বিবাহ হলে এক কন্যা সন্তানসহ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে দিঘলটারী গ্রামের নুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। সেখানেও এক কন্যা সন্তান হলে দ্বিতীয় স্বামীর সংসার ছেড়ে পুনরায় প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে আসেন হাসিনা। পরে আবারও হাসিনার এক কন্যা সন্তান হয়।
হাসিনা হত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পারিবারিক কলহ ও টাকা-পয়সা এবং মাদকসংক্রান্ত বিষয় থাকতে পারে।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নূরনবী বলেন, আমরা নিহত হাসিনার স্বামী আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহেরুন নেছাকে জিজ্ঞাবাদ করি। একপর্যায়ে মেহেরুন বলেন, স্বামী আশরাফুলের কাছ থেকে শুনেছি ওই খণ্ডিত মাথা সে সীমান্তে মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে মাটির নিচে পুঁতে রাখা মাথাটি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মন্তব্য করুন