মুনসুর রহমান তানসেন, কাহালু (বগুড়া)
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পাকুড়ের শিকড়জড়ানো প্রাচীন মসজিদ

পাকুড়গাছের শিকড়ে-বাকড়ে ঘেরা প্রাচীন মসজিদ। ছবি : কালবেলা
পাকুড়গাছের শিকড়ে-বাকড়ে ঘেরা প্রাচীন মসজিদ। ছবি : কালবেলা

বোরতা গ্রামের গুন্নিপাড়া জঙ্গলের পথ ধরে হাঁটলে চোখে পড়বে বিশাল পাকুড়গাছ; কিন্তু কাছে গিয়ে ভালো করে দেখলে, গাছটির শিকড়-বাকড়ে ঢাকা প্রাচীন এক স্থাপনার দেখা মিলবে। প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় এক দেখায় বোঝা মুশকিল, প্রাচীন স্থাপত্যটি আসলে কী কাজে ব্যবহৃত হতো। তবে ছাদের ওপরে পাকুড়ের শেকড়-বাকড়ের মধ্যে তিনটি গম্বুজ এখনো বোঝা যায়।

বগুড়ার কাহালু উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোরতা গ্রামে অবস্থান এই প্রাচীন মসজিদটির। ঠিক ওপরেই বেড়ে উঠে বুড়ো হয়েছে পাকুড়গাছটি। ঝোপজঙ্গলের ভেতরে থাকায় কয়েক বছর আগেও কারও নজরে আসেনি এই প্রাচীন স্থাপনাটি।

আসলে এটি যে একটি মসজিদ, তা এতকাল জানতই না স্থানীয়রা। অনেকে প্রাচীন স্থাপনা হিসেবে চিনলেও সংরক্ষণ বা দেখভালের গুরুত্ব ছিল না। সম্প্রতি মসজিদ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর থেকে গ্রামবাসীসহ আশপাশের মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। বর্তমানে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন মসজিদটি একনজর দেখতে।

কয়েক বছর আগে ঝোপজঙ্গল কেটে ফেলা হলে সবার নজরে আসে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদ। গুন্নিপাড়া জঙ্গলের এই প্রাচীন মসজিদের কথা স্থানীয়ভাবে প্রচার শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে, যে কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকরা মসজিদটি দেখতে কাহালুতে যাচ্ছেন।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দক্ষিণে বোরতা-সিন্দুরাইল গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে মসজিদটির অবস্থান। তবে, কখন, কীভাবে কে মসজিদটি নির্মাণ করেছে, সে ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা নেই কারও। অনেকে বলছেন, ভারত উপমহাদেশে মুসলিম শাসনামলের স্বর্ণযুগে এই মসজিটি নির্মাণ হতে পারে। ১২ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৮ ফুটের প্রস্থের স্থাপনাটির দেয়ালগুলো প্রায় দুই ফুটের মতো পুরু। মসজিদের গাঁথুনি পাতলা ইটের ওপর চুনসুরকির। মাথা নিচু করে ভেতরে ঢুকতে হয়। মসজিদে ৭-৮ জন ব্যক্তির নামাজের জায়গা রয়েছে। তবে এখন আর নামাজ পড়ার পরিবেশ নেই।

বোরতা গ্রামের কোব্বাত, মন্টু ফকির এবং শাকোহালী গ্রামের মিন্টু খান জানান, গুন্নিপাড়া জঙ্গল এলাকা ঝোপজঙ্গল আর উঁচু ঢিবির মতো ছিল। মানুষের তেমন যাওয়া-আসাও ছিল না। সময়ের প্রয়োজনে কয়েক বছর আগে সেখানকার ঝোপজঙ্গল কেটে উঁচু মাটি সমান করে ঈদগাহ মাঠ নির্মাণ করা হয়। তবে মসজিদের ওপর তিনটি বিশাল পাকুড় গাছ কেটে ফেলার সাহস আজও কেউ পাননি। আগে কারও আগ্রহ না থাকলেও প্রাচীনকালের এই মসজিদ দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসে।

জানা গেছে আগে এই মসজিদে যাওয়ার মতো কোনো রাস্তা ছিল না। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ঈদগাহ নির্মাণ করার পর দর্শনার্থীদের মসজিদে যাওয়ার জন্য সরু রাস্তা করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জয়ে নেপাল মিশন শেষ করল নারী কাবাডি দল

অন্তর্বাসে সোনা লেপে দেশে ফিরছিলেন দুবাই প্রবাসী

কারও ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না : মুরাদ 

‘ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ নিলে চরম মূল্য দিতে হবে’

আ.লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে সরকার পশ্চিমাদের দোহাই দেয় : সারজিস

নিজের জমিতেও টিউবওয়েল বসাতে পারছেন না রাজু

ওমানের কাছে হেরে এশিয়া কাপের বাইরে বাংলাদেশ

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপে যাচ্ছে ডিএনসিসি

‘গাবতলী টার্মিনালে আন্তঃজেলা বাস প্রবেশে আলাদা রোড নির্মাণ হবে’

উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানে ভয়াবহ বোমা হামলা

১০

হেফাজতে ইসলামের উত্তরা জোনের প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল 

১১

প্রধান উপদেষ্টাকে মামুনুল হকের হুঁশিয়ারি

১২

নারী সংস্কার কমিশনের ইসলামবিরোধী প্রস্তাবনায় তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের প্রতিবাদ

১৩

‘বিএনপি ক্ষমতা নয়, জনগণের জন্য রাজনীতি করে’

১৪

বিদেশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে নির্যাতন, চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার

১৫

তারেক রহমানকে নিয়ে দ্য উইকের প্রচ্ছদ স্টোরি ‘নিয়তির সন্তান’

১৬

রিয়ালের টিভিতে সমালোচনার ভিডিও দেখে কাঁদলেন এল ক্লাসিকোর রেফারি

১৭

তাপপ্রবাহের মধ্যে রোববার সারা দেশে বৃষ্টির আভাস, কমবে গরম 

১৮

প্রাথমিক শিক্ষকদের সতর্ক বার্তা অধিদপ্তরের

১৯

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিক্ষোভ

২০
X