চাঁদপুরে এক তরুণীকে নির্যাতনের অভিযোগে মামা-মামিকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে শহরের মাদ্রাসা সড়কের মোল্লা বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। ওই তরুণী মামাতো দুই ভাই-বোনকে দেখাশোনার কাজ করতেন।
আটককৃতরা হলেন- ওই বাড়ির আবুল মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লা ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম। রুবেল ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর নাম রুজিনা। তিনি সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের আলী আহম্মদ ভুঁইয়ার মেয়ে। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের মাদ্রাসা সড়কের মোল্লা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় রুজিনাকে উদ্ধার করা হয়। ওই সড়কের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী মোরশেদ আলম ও ফরহাদ হোসেন জানান, রাস্তার পাশে ২০ বছরের ওই তরুণীকে কান্না করতে দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করেন তারা। উত্তরে ওই তরুণী তাদের জানান, মামার বাসা থেকে তিনি পালিয়ে এসেছেন। পরে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে সদর থানার এএসআই কাউসার ওই তরুণীকে উদ্ধারের পাশাপাশি রুবেল মোল্লা ও রোকেয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
নির্যাতনের শিকার রুজিনা বলেন, ৬ মাস আগে মামাতো ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য আমাকে আনা হয়। বাড়িতে কাজ করার সময় কারণে-অকারণে মামি আমাকে মারধর করতেন। কোনো ভুল হলেই গালমন্দ করতেন। কাজ করলে ভুল হতে পারে। আমাকে পুতা, কাঠ ও দা দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন মামি। চার মাস এভাবে মারধর করা হয়। মামা কয়েকবার ওষুধ এনে দিয়েছে, কিন্তু জখম ভালো হয় না।
বৃহস্পতিবার বিকালে নির্যাতন সইতে না পেরে বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ওই তরুণী।
নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর বাবা আলী আহম্মদ ভুঁইয়া জানান, ঘটনাটি জানার পর থানায় গিয়ে মেয়ের নির্যাতনের চিত্র দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আমার মেয়ে এমন নির্যাতনের শিকার আমি জানতাম না। সে ঢাকায় আমার বড় মেয়ের কাছে ছিল। আমাকে না জানিয়ে সেখান থেকে তাকে রুবেলের বাসায় নেওয়া হয়। আমি মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য বললে, পরে নিয়ে আসবে বলত। রোকেয়া আমার মেয়েকে এমন নির্যাতন করেছে কেউ না দেখলে বিশ্বাস করবে না। এই নিষ্ঠুর মহিলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়া বলেন, খবর পেয়ে গৃহকর্মী মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আটক স্বামী-স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন