কোকিল, টিয়া, ঘুঘু, ময়না, দোয়েলসহ ২৫ ধরনের পাখির ডাক জানেন জয়নাল আবেদীন পাখি। সেই সঙ্গে বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই যে কোনো গানের মিউজিক মুখে বাজাতে পারেন। তিনি সবার কাছে পাখি জয়নাল নামে পরিচিত। তাই চেনা অচেনা সবাই তাকে পাখি ভাই বলে ডাকেন। আবালবৃদ্ধবণিতা এমনকি শিশু কিশোরেরা তার পাখির ডাকে বিমোহিত হয়। তাই পাখি ভাই সবার কাছে অতি পছন্দের মানুষ। তাই তার মুখে পাখির নানা ডাক ও সুরে কিছু করে দেখানোর জন্য আবদার করেন।
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার কিষ্টুপুর গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন। তার দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে এলাকার শিশু-কিশোর ও বাজারে বিভিন্ন স্টলে এবং দোকানে সকল বয়সের মানুষের মুখে বিভিন্ন ধরনের পাখির ডাক শুনিয়ে বিনোদন দেন। এ জন্য এলাকায় তিনি পাখি জয়নাল হিসেবে পরিচিত। জয়নাল আবেদীন শুধু শিশুদের কাছে আনন্দের মানুষ, এমন নয়। চায়ের দোকান কিংবা বাজারে তাকে দেখলে মানুষ ঘিরে ধরেন। তার সঙ্গে কৌতুক আর খোশ গল্পে মেতে উঠেন। বাজারের দোকানিরা বলছেন জয়নাল আবেদীন যে দোকানে বসেন সেই দোকানেই বেড়ে যায় বিক্রি।
চৌগাংগা বাজারের চায়ের দোকানদার নজরুল মিয়া বলেন, জয়নাল ভাই দোকানে চা খেতে বসলে উনাকে দেখে দেখে আরও মানুষ এসে বসে। উনি মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য মুখ দিয়ে বিভিন্ন পাখির ডাক দেন। এই বিষয়টা সবাই উপভোগ করেন। ওনার পাখির ডাক উপভোগ করতে গিয়ে আমার দোকানে বেশি বেচাকেনা হয়। মানুষ উনার সঙ্গে গল্প করতে করতে চা, সিগারেট, বিস্কুট খেয়ে থাকেন।
চৌগাংগা বাজারের আরেক ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ জানান, জয়নাল কাকা ছোট, বড় সবার কাছে পাখি জয়নাল নামে পরিচিত। উনাকে দেখলেই সবাই আবদার করে পাখির ডাক শোনানোর জন্য। ওনার যে প্রতিভা এটা প্রশংসনীয়। উনিও খুব সহজ সরল ভালো মানুষ সবাই উনাকে ভালোবাসে।
জয়নাল আবেদীন জানান, অনেক দিন ধরে একটি-দুটি করে পাখির ডাক আয়ত্ত করতে করতে আজ প্রায় ২০ থেকে ২৫টি পাখির ডাকসহ বিভিন্ন মিউজিক রপ্ত করেছেন এবং বলতে ও গাইতে পারেন কবিতা ও গান। তার এ প্রতিভা দেখা ও শুনার জন্য দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিনেই ছুটে আসেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী না হলেও জীবন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই কৃষক জয়নাল মিয়ার।
জয়নাল আবেদীন একজন কৃষক হলেও তাকে ঘিরে মানুষের অনেক আগ্রহ। তার প্রতিভা সবাইকে মুগ্ধ করে।
১০নং চৌগাংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, জয়নাল একজন সাধারণ কৃষক। দীর্ঘদিন ধরেই মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য মুখে পাখির ডাক শুনিয়ে থাকেন। আমার এলাকার সবাই তাকে পছন্দ করে তিনিও সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকেন।
মন্তব্য করুন