‘জনবল সংকটে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র ডেন্টাল সার্জন ও উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) দিয়ে কোনো মতে জরুরি বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো দু-এক দিনের মধ্যেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির জরুরি বিভাগের সেবা বন্ধ করে দিতে হবে।’ কথাগুলো কালবেলাকে বলেন- বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ মুহাম্মদ আমরুল্লাহ।
উপকূলীয় জেলা বরগুনার এই বেতাগী উপজেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এটি। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক না থাকায় উপকূলীয় এ উপজেলার হতদরিদ্র নারী, পুরুষ ও শিশু জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক না থাকায় দাঁতের চিকিৎসক ও সেকমো দিয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ সময় জানতে চাইলে তিনি জানান, অন্যান্য শাখায় চিকিৎসক না থাকায় কোনো মতে ডাক্তারি সাধারণ জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে সেবাপ্রার্থীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা হাওয়া বেগম কালবেলাকে বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার নাই। এক স্যারে আছে হ্যারে দেহাইছি। হুনছি হে বোলে দাঁতের ডাক্তার।
হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া একাধিক রোগী কালবেলাকে বলেন, সকাল-বিকেল একজন ডাক্তার আসে আমাগো দেখে যায়।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা দিতে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪০টি পদে কর্মকর্তা ও একজন ডেন্টাল সার্জন মোট দুজন ডাক্তার আছেন, বাকি পদগুলো খালি রয়েছে। অধিদপ্তর থেকে এরই মধ্যে কয়েক ধাপে ছয়জন চিকিৎসক পদায়ন করা হলেও একজন যোগদান করেও ওইদিন ছাড়া আর আসেননি, বাকিরা তো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই আসেনি।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ মুহাম্মদ আমরুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কনসালটেন্ট, জুনিয়র কনসালটেন্ট, আয়ুর্বেদিক, ডেন্টিস্টসহ মোট ৪০ জন চিকিৎসক থাকার কথা। সেখানে আমি ও একজন ডেন্টিস্ট ছাড়া আর কোনো চিকিৎসক নেই। একজন আবাসিক চিকিৎসক থাকলেও তিনি কয়েকদিন আগে কোর্সে চলে গেছেন।
বর্তমানে ডেন্টিস্ট সার্জন ও সেকমো দিয়ে কোনো মতে জরুরি বিভাগ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। হয়তো দু-এক দিনের মধ্যে চিকিৎসকের অভাবে জরুরি বিভাগ বন্ধ করে দিতে হবে, সেবা নিতে আসা রোগীদের রেফার্ড করতে হবে। অধিদপ্তর থেকে কয়েকজন চিকিৎসককে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়ন করা হলেও কী কারণে তারা যোগদান করছেন না, তা আমার জানা নেই। তবে অধিদপ্তর থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
মন্তব্য করুন