যশোরের শার্শায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল লুটের অভিযোগে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রুহুল কুদ্দুসের প্রাথমিক সদস্যসহ সব প্রকার পদ স্থগিত করা হয়েছে।
বুধবার রাতে (৫ মার্চ) যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রুহুল কুদ্দুস। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তার দাবি, চাল লুটের ঘটনায় তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তদন্ত ছাড়াই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
অভিযোগ উঠেছে, বুধবার সকালে শার্শায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতার ১৫৫ বস্তা চাল বাগআঁচড়া খাদ্য গুদাম থেকে লোড করে কয়েকটি ট্রলিতে করে পাঠানো হচ্ছিল ডিলার শাহাজাহান কবিরের দোকানে। পথিমধ্যে বাগআঁচড়া বকুলতলা পৌঁছলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা শার্শা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান রহুল কুদ্দুসের ভাই ইবাদুল ইসলাম কালু ও তার লোকজন ট্রলি দাঁড় করিয়ে চালককে জিম্মি করে ১৫৫ বস্তা চাল নিজের গোডাউনে নামিয়ে নেন। বিষয়টি প্রশাসন ও দলীয় নেতাদের কাছে খবর যাওয়ার পর দুপুরের দিকে চালের ট্রলি ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার জের ধরে বুধবার রাতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দোলোয়ার হোসেন খোকন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শার্শা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রুহুল কুদ্দুসের প্রাথমিক সদস্যসহ সব প্রকার পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে রুহুল কুদ্দুস বলেন, ঘটনাস্থল বাগআঁচড়া বকুলতলা মোড়ে, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। চাল লুটের বিষয়টি সঠিক নয়। ওই ঘটনার পরপরই কায়বা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের ডিলার শাহাজান কবির আমার কাছে মোবাইলফোনে কল করে বিষয়টি অবহিত করেন। তাৎক্ষণিক আমার ভাই ইবাদুল ইসলামকে কল করে ডিলার শাহজাহান কবিরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাই। তিনি দাবি করে শাহজাহান কবিরের কাছে তার নগদ টাকা পাওনা রয়েছে। এজন্য চাল আটকে রেখেছে। সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল জানতে পেরে ট্রলিগুলো আমার ভাই ছেড়ে দেয়।
তিনি বলেন, ঘটনাটি নিছক আমার ভাই ও ডিলার শাহাজন কবিরের ব্যক্তিগত বিষয়। যা আমি মোটেও জ্ঞাত ছিলাম না। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে ধ্বংস ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল কুদ্দুস বলেন, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিলার শাহাজান কবির, ডিলারের প্রতিনিধি তৌহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেরুল হক সাবু কালবেলাকে বলেন, প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে চাল লুটের অভিযোগ আসে। প্রাথমিকভাবে তার পদ স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রমাণিত না হলে তার স্থগিত আদেশ প্রত্যাহার করা হবে।
মন্তব্য করুন