ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে এক যুবককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় তারা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশি তৎপরতায় টাকা ছাড়াই ৫ ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দিয়েছেন অপহরণকারীরা।
বুধবার (৫ মার্চ) রাত ৩টায় চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ওই দিন রাত ১১টার দিকে ইছানগরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল।
অপহৃত ব্যক্তির নাম শহীদুল আলম। তিনি ইছানগরের বাসিন্দা এবং মাছের ব্যবসায়ী। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বলেন, এলাকায় তার ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণে প্রতিপক্ষের লোকজন এমন করে থাকতে পারে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার রাত প্রায় ১১টার দিকে ইছানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন শহীদুল। এসময় ৩টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ১২ থেকে ১৫ জন লোক থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শহীদুল আলমকে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নেয়। এ সময় তাকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার পরিবারের লোকজন কর্ণফুলী থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে রাত আড়াইটার দিকে শহীদুলকে নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
মুক্তি পাওয়া শহীদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, ‘অটোরিকশায় থাকা লোকজন নিজেদের মহানগর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেয়। আমাকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে অটোরিকশাটি। পরে আমাকে আরেকটি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা আমার ফেসবুক আইডি চেক করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধী কোনো পোস্ট করেছি কি না, যাচাই করে। ফেসবুক আইডিতে তেমন কিছু না পেয়ে তারা প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা ও পরে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকার জন্য আমি তাদের বিকাশ নম্বর দিতে বলি এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাই। এ সময় তারা টাকা না নিয়ে আমাকে একটি রিকশায় তুলে দেয়।’
ভুক্তভোগী জুয়েলের বাবা শাহ আলম বলেন, অপহরণকারীরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে জুয়েলকে ছাড়তে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একপর্যায়ে তারা ৫ লাখ টাকায় নেমে বিকাশের মাধ্যমে টাকাগুলো পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পুলিশি তৎপরতায় জুয়েলকে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চট্টগ্রাম নগর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক জোবাইরুল আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ কালবেলাকে বলেন, পরিবারের অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক অভিযানে নামে পুলিশ। পুলিশের কড়া নজরদারির ফলে অপহরণকারীরা জুয়েলকে ছেড়ে পালিয়েছে। পরে আমরা তাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে আসি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন