বরগুনার তালতলীতে স্ত্রী ও তিন মাসের এক শিশুসন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক গৃহবধূ। বুধবার (৫ মার্চ) সকালে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তাঁতিপাড়া এলাকার বাশার সিকদারের ছেলে মো. সজীবের বাড়িতে অনশনে বসেন গৃহবধূ।
জানা গেছে, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তাঁতিপাড়া এলাকার বাশার সিকদারের ছেলে সজীবের সঙ্গে মেনিপাড়া এলাকার নাদিয়ার ১৪ মাস আগে বিয়ে হয়। স্বামী সজীবের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নাদিয়া তার বাবার বাড়িতে যায়। পরে স্বামী সজীব কোনো খোঁজখবর না নিলে নাদিয়া বাদী হয়ে স্বামীর সজীবের বিরুদ্ধে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশনায় নাদিয়াকে সজীবের বাড়িতে পাঠানো হয়। আদালত থেকে বাড়িতে ফেরার পথে সজীব স্ত্রী নাদিয়াকে মারধর করে পথে রেখে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে তিন মাস আগে নাদিয়ার কোলে কন্যাসন্তান আসে। পরে আদালতের মাধ্যমে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন স্বামী সজীব। কিন্তু ডিভোর্স প্রত্যাখ্যান করেন নাদিয়া। এর মধ্যে কন্যাসন্তানকে অস্বীকার করেন সজীব। পরে ওই শিশুকন্যাকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছেন নাদিয়া।
গৃহবধূ নাদিয়া বলেন, আদালত থেকে আমার স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয় যাতে সংসার করতে পারি। আমাকে স্বামী সজীব বাড়িতে নেওয়ার পথে মারধর করে ফেলে গেছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কথা অমান্য করে তার বাড়িতে উঠায়নি আমাকে। এখন আমার গর্ভে আসা সন্তানকে অস্বীকার করছে। তাই কোনো উপায় না পেয়ে সন্তানের স্বীকৃতির জন্য অনশনে বসেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা আনছার আলম বলেন, আমি তেমন কিছু জানি না। আমি এলাকার মুরব্বি। সকালে এ মেয়ে আমার বাড়িতে এসেছে, পরে মেয়েকে নিয়ে সজীবের বাড়িতে গিয়েছি। তার কথা জিজ্ঞেস করলে তার মা জানায়, সে বাড়িতে নেই। তাদের বউকে ঘরে উঠাতে বললেও তারা উঠায়নি। তিন মাসের সন্তান নিয়ে দরজার সামনে বসে ছিল সে।
গৃহবধূর শাশুড়ি বলেন, ছেলের বউ আট মাস আগে আমার বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়ি বেড়াতে চলে যায়। পরে আমার ছেলে কয়েকবার কল দিলেও বাড়িতে আসেনি। ছেলের সন্দেহ হয় অন্য ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে। ছেলের বউ যখন তার মায়ের কাছে ছিল সেই সময় নাকি অন্য এক ছেলের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এটা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হয়। কিছু দিন পরে আমার ছেলের বিরুদ্ধে বরগুনা নারী শিশু নির্যাতন আদালতে মামলা করে ছেলের বউ। এখন আমার ছেলে ঘরে বউকে উঠাবে কিনা জানি না। এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।
গৃহবধূর স্বামী সজীব সিকদার বলেন, আদালত থেকে তাকে নিয়ে আমার বাড়িতে আসার সময় তাদের বাড়ির সামনে আসলে সে তাদের বাড়িতে যেতে চায়। আদালত থেকে রায় দিছে আমার বাড়িতে যাবে। তাদের বাড়িতে যেতে হবে কেন?
তালতলী থানার (ওসি) মো. শাহাজালাল বলেন, সন্তানের স্বীকৃতির চেয়ে অনশন করছে; এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন