এলাকায় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন রেজাউল ইসলাম (২২)। লেখাপড়ার দৌড়ে প্রাথমিকের গণ্ডিও পার হতে পারেননি। কিন্তু সাংবাদিক হওয়ার ভূত চাপে তার মাথায়। অসদুপায়ে অখ্যাত এক অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র জোগার করেন। তার পদ দেওয়া হয় ‘বিশেষ প্রতিনিধি’ রাজবাড়ী।
তবে এ পদ পেয়ে এখন লাভের পরিবর্তে বিপাকে পড়েছেন রেজাউল। সাংবাদিকতা করবেন না জানিয়ে ওই অনলাইন নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছেন আইনি নোটিশ।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজবাড়ী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী নাজমুল হক লিটনের মাধ্যমে দৈনিক দেশ বুলেটিন নামক ওই অনলাইন নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি।
রেজাউল ইসলাম পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামের কাসেম মণ্ডলের ছেলে।
নোটিশে আইনজীবী লিটন বলেন, আমার মক্কেল একজন গরিব ভ্যান-রিকশাচালক। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সরল মনে সাংবাদিক নিয়োগ ফরমে নাম লিখে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনি দৈনিক দেশ বুলেটিনের পক্ষে একটি নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড প্রদান করেন। আমার মক্কেলের সাংবাদিক হওয়ার মতো অভিজ্ঞতা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। তাই আমার মক্কেল ওই পত্রিকার সাংবাদিক হতে ইচ্ছুক না।
জানা গেছে, দৈনিক দেশ বুলেটিন ২৪ ফেব্রুয়ারি রেজাউলকে বিশেষ প্রতিনিধি (রাজবাড়ী) পদবি দিয়ে একটি নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান করে।
নিয়োগপত্রে বলা হয়, আপনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ প্রতিনিধি রাজবাড়ী এর সংবাদ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হলো। আপনার নিউজ লেখার মান, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিষয়ে দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা এবং দায়িত্বশীলতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিশেষ প্রতিনিধি রাজবাড়ী এর চলতি ঘটনাবলিসহ অন্য যে কোনো ধরনের নিউজ আপনি পাঠাতে পারবেন।
ওই নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্রের ছবি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে নিজেই নিজেকে অভিনন্দন জানান রেজাউল। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা তৈরি হয়। ভ্যানচালক কীভাবে সাংবাদিক হয়ে গেল! এমন মন্তব্যও করেন অনেকে। এরপর বিভিন্ন স্থান থেকে ফোন আসতে শুরু করে রেজাউলের কাছে।
আইনি নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে রেজাউল বলেন, ‘উকিল নোটিশ পাঠায় দিছি। আমি আর সাংবাদিকতা করব না।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দেশ বুলেটিনের ওয়েবসাইটে দেওয়া টেলিফোন নম্বরে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন