রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় জুয়েল রানা নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ওই যুবকের মৃত্যুর ২০ ঘণ্টা পার হলেও এখনো দাফন হয়নি। জানা গেছে, জেলে থাকা বাবা-চাচার অপেক্ষায় বাড়ির উঠানে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে ছেলের লাশ। তারা কখন আসবেন জানে না কেউ। এদিকে স্বজনদের অপেক্ষার প্রহর যেন কাটছে না।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে বোয়ালিয়া মোড় এলাকায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত জুয়েল রানা কুড়িপাড়া গ্রামের মো. নাজিমুদ্দিন মন্ডলের ছেলে। তিনি রাজবাড়ী কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী ছিলেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে জমিসংক্রান্ত বিরোধে নিহত জুয়েলে বাবা নাজিমুদ্দিনের সাথে চাচাত ভাই এতেম আলীর মারামারির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় নাজিমুদ্দিন মন্ডল ও তার পাঁচ ভাইকে আসামি করে পাংশা মডেল একটি মামলা করেন এতেম আলীর পরিবার। উক্ত মামলায় গত বছর দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নাজিমুদ্দিনসহ তার তার পাঁচ ভাইকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় রাজবাড়ী অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত।
নাজিমুদ্দিনের ভাতিজা কামাল মন্ডল কালবেলাকে বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আমার বাবা ও পাঁচ চাচা উক্ত মামালায় রাজবাড়ী কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাদের জামিন নামুঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। গত দুইদিন আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) আমি ও আমার চাচাত ভাই জুয়েল রানাসহ ৫-৬ জন রাজবাড়ী কারাগারে আমার বাবা ও চাচাদের আনতে যায়। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে জামিনের নথি না আসায় তাদের (বাবা-চাচা) মুক্তি হয়নি। এরপর রাজবাড়ী থেকে ফেরার পথে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া মোড় এলাকায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে জুয়েল রানার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রেজাউল ইসলাম (মোটরসাইকেল চালক) নামে আমার আরও এক ভাই আহত হয়। তিনি বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিনি আরও বলেন, জেলে থাকা বাবা ও চাচাদের জন্য আমার ভাইয়ের মরদেহ লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে। আজ (বুধবার) তারা রাজবাড়ীর কারাগার থেকে সন্ধ্যায় মুক্তি পাবেন। তারা আসলে আমাদের বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে জুয়েলের দাফন সম্পন্ন হবে। তবে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর তাদের দেওয়া হয়নি যোগ করে তিনি।
মন্তব্য করুন