লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসিফ রেজাকে দ্বিতীয় স্ত্রীর যৌতুক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে দীর্ঘ শুনানি শেষে জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদরের আদালতের বিচারক হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর আগে আসিফ রেজা কমলনগর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর হাজিরহাট ইউনিয়নের এক গৃহবধূকে তিনি কৃষাণী গ্রুপের সভাপতি নির্বাচিত করেন। এরপর থেকে ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন কৃষি কর্মকর্তা। গৃহবধূকে সভাপতি বানানোর পর তার মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন প্রোগ্রামে নিতেন। এরই সুবাদে তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এদিকে কৃষি কর্মকর্তা আসিফের স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে ওই গৃহবধূর ম্যাটসে পড়ুয়া এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কৃষি কর্মকর্তা ওই গৃহবধূকে দিয়ে তার স্বামীকে ডিভোর্স করিয়ে ১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেন। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীকে লক্ষ্মীপুর ভাড়া বাসায় রাখেন এবং তিনি রায়পুর উপজেলায় বদলি হয়ে যান। এরই মধ্যে তার প্রথম স্ত্রী এসব তথ্য জেনে গেলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরে আসিফ তার প্রথম স্ত্রীর কাছে চলে যান এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা করেন।
এরই মধ্যে আসিফ তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কথা বলে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরে দ্বিতীয় স্ত্রী চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লক্ষ্মীপুরের আদালতে যৌতুক আইনে মামলা করেন। মামলার পর আদালত আসিফ রেজার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে। পরে আসিফ বিষয়টি সমাধান করবে বলে আদালত থেকে এক মাসের সময় নেয়। সমঝোতা না হওয়ায় মঙ্গলবার আসিফ আদালতে হাজির হলে বিচারিক হাকিম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ মোরশেদ আলম শিপন বলেন, বাদীপক্ষের যৌতুক মামলায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসিফ রেজাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে আমরা ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করছি।
রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, আমি অফিসে শুনেছি এবং জেলা ও বিভাগীয় অফিস তথ্য দিয়ে রেখেছি। যাবতীয় তথ্য পেলে অফিসিয়াল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন