পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কক্ষে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে মারধরের ঘটনায় বিএনপির তিন ও ছাত্রদলের এক নেতাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে এ আদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে সোমবার (৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, পাবনার সুজানগর উপজেলা ইউএনওর কার্যালয়ে প্রবেশ করে হাঙ্গামা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে অশোভন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে সুজানগর উপজেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মজিবর রহমান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু খাঁ, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মানিক খাঁ এবং সুজানগর এনএ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাকিল খানকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ এবিএম তৌফিক হাসান বলেন, কেন্দ্র থেকে শোকজ করেছে এটা লোক মাধ্যমে শুনেছি, তবে স্থানীয়ভাবে আমরা এখনো এমন চিঠি বা নির্দেশনা পাইনি। আমি অসুস্থতার জন্য বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি। এ ঘটনা কোনোভাবেই ঘটানো ঠিক হয়নি। সরকারি অফিসে তাও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রুমে ন্যক্কারজনক ঘটনা হয়েছে। বাহিরে হলে তো মেনে নেওয়া যেত। এসব দুষ্কৃতকারীর শাস্তি হওয়া দরকার।
সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, আমার রুমে এ ঘটনা ঘটেছে সেটা খুবই কষ্টদায়ক। ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সেখান থেকে নির্দেশনা এলে আমি মামলা করতে পারব। তাছাড়া আমি নিজে নিজের সিদ্ধান্তে মামলা বা অভিযোগ দিতে পারব না। এ ক্ষেত্রে স্যারদের পারমিশন লাগবে।
উল্লেখ্য, সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জামায়াতের চার নেতা কোনো একটি কাজে ইউএনওর অফিসে যান। ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় জামায়াত নেতারা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী বালু উত্তোলন বন্ধ করেছেন কেন জানতে ইউএনওর কাছে যান। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন।
এরপরই বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খাঁ, মানিক খাঁ, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী ইউএনওর কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের কিল-ঘুষি, লাথিসহ বেধড়ক মারধর করেন। মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
মন্তব্য করুন