খোলা বাজারে খাদ্য শস্য বিক্রয় (ওএমএস) কর্মসূচীর তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে অফিস কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হাসনাত মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হাসনাত মো.মিজানুর রহমান। তিনি দাবি করেছেন, সংবাদিকসহ উপস্থিত লোকজনকে আমি ভদ্রতার সঙ্গে বাইরে যেতে বলেছি। পরে আসতে বলেছি। যদিও তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী এ কর্মকর্তার ব্যবহারের জন্য তার হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি দৈনিক কালবেলা পত্রিকার রৌমারী উপজেলা প্রতিনিধি।
সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রৌমারী উপজেলার ওএমএস এর ডিলার ও বিক্রয় স্থানের তথ্য জানার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসে যাই। অফিস সহকারী জাকির হোসেন তথ্য দেওয়ার জন্য ফাইল বের করেন। এ সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান অফিসে ঢুকে সাংবাদিককে দেখে আকস্মিক উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি সাংবাদিক আসার কারণ জানতে চেয়ে অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তার অফিস সহকারীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সাংবাদিক কেন এসেছে, কি চায়? উত্তরে অফিস সহকারী বলেন, স্যার সাংবাদিক ওএমএস এর তথ্য চান। এ কথা শোনামাত্র তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাকে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এভাবে বলার কারণ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা আরও রেগে যান। তখন আমাকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, আমার চার ভাই সাংবাদিক। আমার কাছে তথ্য চান। এতো বড় সাহস। যান বের হয়ে যান। কোনও তথ্য দেব না। এরপর আমি অফিস থেকে চলে আসি।
এ নিয়ে জানতে অফিস সহাকারী জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যার আসলে সাংবাদিককে চিনতে পারেননি। খুব বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবুও যা হয়েছে তার জন্য আমি স্যারের পক্ষ থেকে স্যরি বলছি। আমার অনুরোধ থাকবে বিষয়টি যেন না বাড়ে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। তার অফিসে কোনও সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা হয়নি, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেও তিনি দাবি করেন। পরে প্রশ্নের মুখে সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাতের সত্যতা স্বীকার করেন।
মিজানুর রহমান বলেন, আমি এমন কোনও ব্যবহার করিনি। আমি কি গর্ধব যে সাংবাদিককে রুম থেকে বের করে দেব? আমি কোনও উত্তর দিতে চাচ্ছি না। অনেক লোক ছিল। আমি বলেছি যে সবাই একটু বাইরে যান। আমরা একটু কাজ করি।
চার ভাই সাংবাদিক এ প্রশ্নে খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলেন, আমার চাচাতো-মামাতো ভাই সাংবাদিক। কিন্তু আমি এসব তাকে বলিনি। এসব বলার বিষয় নয়। আমি ভদ্র ফ্যামিলির সন্তান। আমাদের চাকরিতে আমরা সাংবাদিকদের সম্মান করি। আমি তাকে বের করে দেইনি। আমি এগুলো নিয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না।
খাদ্য বিভাগ সূত্র বলছে, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হাসনাত মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তাকে শাস্তিমূলক বদলি হিসেবে রৌমারীতে পদায়ন করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল কাবির খান বলেন, তিনি (খাদ্য কর্মকর্তা) দুর্ব্যবহার করবেন কেন? দুর্ব্যবহার করার কোনও সুযোগ নাই। তার কিছু সমস্যা আছে। আমি বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলব।
মন্তব্য করুন