মাত্র ৯১ দিনে পবিত্র কোরআনের সম্পূর্ণ পারা মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার বিস্ময়কর এক কৃতিত্ব গড়েছেন ৬ বছর বয়সী শিশু আব্দুর রহমান। প্রখর এই মেধাবী শিক্ষার্থী রাজধানী ঢাকার ৩০০ ফিট এলাকার পুলিশ হাউজিংয়ে অবস্থিত স্বনামধন্য ইংলিশ ভার্সন স্কুল ও মাদ্রাসা ‘আল ইন্তিফাদা ইনস্টিটিউট’-এর দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। হিফজ শেষ করে বর্তমানে অধ্যয়ন করছেন রিভিশন বিভাগে।
হাফেজ আব্দুর রহমান কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার জৌনপুরি গ্রামের বাসিন্দা। প্রবাসী ফরাদ হোসেন ও তাহমিনা দম্পতির সন্তান।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, শিশু আব্দুর রহমান ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষের দিকে আল ইন্তিফাদা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে তার পড়ালেখা শুরু হয়। প্রথমে সে কোরআন দেখে দেখে পড়া শুরু করে। পরে মাত্র ৯১ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে ফেলে। ইংরেজিতেও তার রয়েছে বিশেষ দক্ষতা, যা যে কাউকেই মুগ্ধ করার মতো।
শিক্ষকদের পরম যত্ন ও নিবিড় পরিচর্যায় কোরআনের এই হাফেজ এখন অন্যদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বসেরা আলেম হতে চান শিশু আব্দুর রহমান।
এ বিষয়ে আব্দুর রহমান কালবেলা প্রতিবেদককে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমি আমার ওস্তাদদের সহযোগিতায় ৯১ দিনে হিফজ সম্পন্ন করেছি। আমি বড় হয়ে একজন ইসলামিক স্কলার হতে চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
এদিকে তার অসাধারণ মেধা ও অধ্যবসায় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদেরও অবাক করেছে। ছয় বছর বয়সেই কোরআন হিফজের মতো মহান অর্জন, অন্যদিকে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা- সব মিলিয়ে শিশু আব্দুর রহমানের এই অসাধারণ কৃতিত্বকে এক অলৌকিক ব্যাপার হিসেবেই দেখছেন তার শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে আল ইন্তিফাদা ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা আশরাফুল ইসলাম বলেন, কথায় আছে A continue effort makes a man perfect অর্থাৎ, কোনো কাজে নিরন্তর প্রচেষ্টা যেকোনো ব্যক্তির জন্যই সফলতা বয়ে আনে। তেমনি আব্দুর রহমান আমাদের এখানেই শুরু থেকে একযোগে পড়াশোনা করে মাত্র ৯১ দিনেই হিফজ শেষে করেছে। সে দুই ঈদের ছুটি ও মাদরাসার নির্ধারিত ছুটি ব্যতীত একটি দিনও ছুটি কাটায়নি। তার এই কন্টিনিউ অ্যাক্টিভিটি ও তার প্রতি সম্মানিত উস্তাদগনের দুয়া ও আল্লাহর বিশেষ রহমত তাকে এই সফলতা এনে দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। আল্লাহ তায়ালা তাকে দ্বীনের একনিষ্ঠ খাদেম হিসেবে কবুল করুন, আমিন।
হাফেজ আব্দুর রহমানের এই কৃতিত্ব শুধু তার পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নয়, বরং এটি পুরো দেশের মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনন্য আনন্দের বার্তা। তার বাবা-মা আশা করেন, তাদের ছোট্ট সন্তান একদিন বড় আলেম হয়ে বিশ্বব্যাপী ইসলামের খেদমত করবে।
মন্তব্য করুন