সিলেটে রমজান উপলক্ষে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। মাছ মাংসের দামও ঊধ্বমুখী। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেল। বড় বড় ব্যবসায়ীরা শর্ত দিয়ে বিক্রি করছেন তেল। ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ টমেটো, গাজর, বেগুন, শসার দাম একদিনের ব্যবধানে বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে লেবুর দাম। এক হালি লেবু ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হতেও দেখা গেছে। বন্দরবাজারে একটি জারা লেবুর দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫০০ টাকা।
রোববার (০২ মার্চ) বিকেলে সিলেটের বন্দরবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, সুবিদবাজার, রিকাবীবাজার, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, টিলাগড় পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে- সব ধরনের সবজি ও নিত্যপণ্যের দাম চড়া। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও অধিক দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে বিভিন্ন বাজারে বিক্রেতাদের সাথে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন ক্রেতারা।
নগরীর অন্যতম লালবাজার এলাকায় বিভিন্ন ধরনের লেবুর পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতা বরকত। তার কাছে ১০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা হালি ধরনের লেবু রয়েছে। একটি জারা লেবুর দাম ২৫০০ টাকা বলে জানান তিনি।
বাজার ভেদে দামের তারতম্যও আছে। লালবাজার যে লেবুর দাম ২০০ টাকা হালি ব্রম্মময়ী বাজারের সামনে থেকে সিটি পয়েন্ট পর্যন্ত ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছে সেই লেবু ১০০ টাকা। এ ছাড়া আম্বরখানা এলাকায় যে লেবু ১০০ টাকা রিকাবীবাজারে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
ইফতারের অনুষঙ্গ গাজর, বেগুন ও শসার দামও বেড়েছে কেজিতে ১০-১৫ টাকা। বন্দরবাজার এলাকায় বেগুন ৫০-৬০ টাকা, শসা ৪০-৪৫ টাকা, গাজর ৫০-৬০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৬০-৭০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, লাউ মাঝারি ৫০-৬০ টাকা, কুমড়া ৪০-৫০ দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। মদিনা মার্কেট এলাকায় প্রতিকেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা, গাজর ৫০-৬০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
বন্দরবাজারের বিক্রেতারা সালেহ আহমদ কালবেলাকে জানান, রমজান সামনে রেখে দাম একটু বেশি নিচ্ছেন আড়তদাররা। বাধ্য হয়ে একটু বেশি নিতে হয়। তবে, বন্দরবাজার এলাকায় সবচেয়ে কম নেওয়া হচ্ছে সবজির দাম।
আম্বরখানার ব্যবসায়ী শাহাদৎ হোসেন কালবেলাকে বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে সবজির দাম কমই নেওয়া হচ্ছে। তবে, সরবরাহ কম থাকায় হঠাৎ লেবুর দাম বেড়ে গেছে।
রিকাবীবাজারে বাজার করতে আসা তাহের মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেশিরভাগ ব্যবসায়ীই অসৎ। একদিন আগেও যে লেবুর দাম ছিল ৩০ টাকা হালি তা হয়ে গেছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। তারা ইচ্ছেমত মানুষের পকেট কাটছে। প্রশাসনকে অন্তত এই মাস সর্বোচ্চ মনিটরিংয়ে রাখা উচিত বলে জানান তিনি।
বাড়তি দামের বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সিলেট মেট্রো) দেবানন্দ সিনহা কালবেলাকে বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। লেবুর দামটা একটু বেশি নিচ্ছে বলে মনে হয়েছে। যেখানেই বেশি দামে পণ্য বিক্রি হবে সেখানেই অভিযান পারিচালনা করা হবে।
সয়াবিন তেলের সংকট বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে প্রশাসন জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে। দু‘একদিনের মধ্যে সংকট কেটে যাবে। বড় বড় কিছু কোম্পানির সীমিত সরবরাহ থাকায় এ সমস্যার তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন