রোজার শুরুতেই সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বাজারে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে লেবুর দাম। সাধারণত রোজার সময় এ পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। এ ছাড়া বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। এ নিয়ে দৈনিক কালবেলায় ‘জগন্নাথপুরে লেবুর হালি ২০০ টাকা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে রোববার (০২ মার্চ) বিকেলে বাজার মনিটরিংয়ের আওতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জগন্নাথপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করে।
জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঞা সা-আধের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সবজি বাজার, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দোকান মনিটরিং করা হয়। পরে মূল্যতালিকা না থাকায় ৩ ব্যবসায়ীকে মোট ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও বাজারের মুদি দোকান ও সবজির বাজার মনিটরিং করা হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঞা সা-আধ বলেন, মূলত লেবুর দাম বেশি রাখা হচ্ছে। তাই ব্যবসায়ীদের সাবধান করা হয়েছে। নন ব্র্যান্ডের তেল বাজারে রয়েছে। তবে বোতলজাত অন্যান্য ব্র্যান্ডের তেল না থাকলেও রুপচাদার দুই লিটারের তেল রয়েছে। যে কোনো ধরনের কৃত্রিম সংকট না তৈরির জন্য সতর্ক করা হয়।
তিনি বলেন, সবজি বাজারে চড়া দামে লেবু বিক্রি হচ্ছে এমন খবরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। ৩টি দোকানকে জরিমানা করা হয়। মূল্য তালিকার চেয়ে অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হলে গ্রাহকদের ভিডিও করে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার (১ মার্চ) জগন্নাথপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিহালি লেবু ছোট আকারের ১৬০-১৮০ টাকা, মাঝারি আকারের ২০০ টাকা। আর বড় আকারের লেবু ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজি কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। বেড়েছে মাংসের দামও। সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, ব্রয়লার ২০০ থেকে ২২০ টাকা। লাল মোরগ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। এদিকে, ভোজ্যতেলের তীব্র সংকট সৃষ্টি করে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ফজলু মিয়া নামের এক ক্রেতা বলেন, রোজার একদিন আগেই বাজারে যেন আগুন লেগেছে। সয়াবিন তেল বাজার থেকে উধাও। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছি।
সবজি ব্যবসায়ী শেরন ভাণ্ডারি বলেন, লেবুর সংকট থাকায় আড়তদার থেকে বেশি দামে কিনতে হয়েছে। এর মধ্যে যাতায়াত খরচ রয়েছে। এজন্য লেবুর দাম একটু বেশি। তবে অন্যসব সবজির দাম বাড়েনি।
পাইকারি বিক্রেতা রমিজ আলী বলেন, আমাদের কাছ থেকে কম দামে কিনে আড়তদাররা বেশি দামে বিক্রি করে। সে জন্য দাম বেড়ে যায়।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরকত উল্লাহ বলেন, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কিছুদিন ধরে সভা ও মাইকিংয়ে ব্যাপক প্রচার করছে উপজেলা প্রশাসন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে বাজার তদারকি করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন