আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪৬ এএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে ১২ বছর পুলিশে চাকরি, কনস্টেবল আটক

মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে ১২ বছর পুলিশে চাকরি
আটক কনস্টেবল। ছবি : কালবেলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধার নাতির মিথ্যা পরিচয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। দীর্ঘ ১২ বছর পর তদন্তে তার প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়েছে।

সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার আগে থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। শুক্রবার বিকেলে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফিরলে আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে। শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে ওই পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আটকের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন। তিনি বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সুমন শুক্রবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন। গোপন সংবাদের মাধ্যমে তার আসার সংবাদ পেয়ে ইমিগ্রেশন এলাকায় সদর থানা পুলিশ অবস্থান নেন। সেখান থেকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রতারণার অভিযোগ ওঠা ওই পুলিশ সদস্যের নাম মো. সুমন। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়ার ছেলে সুমন। ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় অংশ নেন এবং মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরির জন্য প্রতিবেশী মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন। প্রকৃতপক্ষে, হোসেন মিয়া তার দাদা নয়। এই প্রতারণার বিষয়ে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগের পর তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেনকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত মো. সুমন ২০১২ সালের ৩ জুলাই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিনি ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পরীক্ষার সময় তার প্রতিবেশী হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। পরবর্তী বিধি মোতাবেক পুলিশ ভেরিফিকেশনের (ভিআর) পর ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ থেকে কনস্টেবল পদে চাকরি করে আসছিলেন।

প্রকৃতপক্ষে মো. সুমনের দাখিলকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়া (অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য) তার দাদা নন। অভিযুক্ত মো. সুমনের দাদার নাম আলতাফ আলী হোসেন। সে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়ার নাতি না হয়েও ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়ে যাবতীয় বেতন ও রেশনসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন।

এদিকে, সর্বশেষ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানায় কর্মরত থাকা কনস্টেবল মো. সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলাকালেই গত বছরের ১ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। এরপর ২১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৯৯ বেত্রাঘাতের শাস্তির ভয়ে ইরানে যাচ্ছেন না রোনালদো?

পানি চুক্তি পর্যালোচনায় ভারতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল

রোনালদোকে দলে ভেড়াতে চায় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব

বাহার কন্যা সূচনার সম্পদ জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

মাদক মামলায় খালাস পেলেন ডা. ঈশিতা

আ.লীগকে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে মতামত জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

তাবিথ আওয়াল-প্রণয় ভার্মার সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক ছাড়া উপায় নেই: ড. ইউনূস

ঢাকায় আবাসিক হোটেলে আগুন, নিহত ৪ 

অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি : প্রধান উপদেষ্টা

১০

ঢাকার শাহজাদপুরে আগুন 

১১

তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

১২

একটি পলাতক দল দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছে: ড. ইউনূস

১৩

দেখে নিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল ম্যাচের সময়সূচি

১৪

জর্ডান-ইসরায়েল সীমান্তে ভারতীয়কে গুলি করে হত্যা

১৫

ইফতারের মুড়িতে জিলাপি, পক্ষে না বিপক্ষে

১৬

সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগে বাধা নেই

১৭

হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল

১৮

নীতিমালা ছাড়া রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষমতা প্রশ্নে হাইকোর্টে রুল

১৯

শ্রমিকের ‘আত্মহত্যা’, গাজীপুরে বিক্ষোভ

২০
X