বগুড়ার সদরে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সাবগ্রাম দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মা আনোয়ারা বেগম (৫৮) ও মেয়ে ছকিনা বেগম (৩৫)। ছকিনার দ্বিতীয় স্বামী রুবেল মিয়া এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে দাবি নিহতের স্বজনদের।
বগুড়া শহরের নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের মামাতো ভাই রবিউল ইসলাম জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে তালাক হওয়ার পরে ৬ বছর আগে হাসনাপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার সঙ্গে ছকিনার বিয়ে হয়। এরপর ছকিনা তার প্রথম পক্ষের সন্তান সাব্বিরকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়া শহরের আকাশ তারা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। রুবেল মাদকাসক্ত এবং চুরির সাথে জড়িত থাকায় ছকিনা তাকে তালাক দেয়। এরপর ছকিনা তার মা আনোয়ারা বেগমকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসে আলাদা বাড়িভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। এক বছর আগে রুবেলের অনুরোধে ছকিনা আবারও তার সংসারে ফিরে যায়। কিন্তু রুবেল তার স্বভাব পরিবর্তন না করায় ছয় মাস আগে আবারও দুজনের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, মা-মেয়ে সাবগ্রাম দক্ষিণপাড়ায় ২ শতাংশ জায়গা কিনে সেখানে টিনের বাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করেছিলেন। এক মাস আগে ছকিনা তার প্রথম স্বামী বাদশা মিয়াকে বিয়ে করে। বাদশা মিয়া তার গ্রামের বাড়ি সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া গ্রামে বসবাস করেন। রুবেল এ খবর জানতে পেরে ছকিনার ওপর ক্ষুব্ধ হন।
ছকিনার ছেলে সাব্বির আহম্মেদ বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুবেল বাড়িতে এসে তার মাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। তাকে ছেড়ে দিয়ে প্রথম স্বামীকে বিয়ে করায় তাদের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সঙ্গে নিয়ে আসা রামদা দিয়ে কোপানো শুরু করেন। এ সময় তার নানি আনোয়ারা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে রুবেল পালিয়ে যান। দুজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত দেড়টার দিকে তার মা মারা যান। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে তার নানিরও মৃত্যু হয়।
নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল হক বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ সময় বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে রক্তমাখা রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত রুবেলকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে। নিহত মা-মেয়ের লাশ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
মন্তব্য করুন