বাসায় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবৈধ সংযোগ স্থাপন করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের অভিযোগে নোয়াখালী হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী এবং তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা উল্লেখ করা হয়।
গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নোয়াখালী বিদ্যুৎ আদালত (যুগ্ম জেলা জজ) ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিনের নেতৃত্বে অবৈধ সংযোগ ও বকেয়াধারী গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান পরিচালিত হয়। এতে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী ও তার দুই ছেলে আশিক আলী অমি এবং মাহতাব আলী অদ্রির অবৈধভাবে স্থাপন করা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং মিটারসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিউবো তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শেখ ফিরোজ কবির, হাতিয়া বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মসিউর রহমানসহ স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী ও তার ছেলেরা ৮-১০ বছর যাবত তার দুইটি বাসা এবং গুদামে ব্যবহারিত মিটারের পাশাপাশি হুকিং করে ভিন্নভাবে অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে ফ্রিজ, এসিসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতেন। এমন কি তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম আলী করপোরেশনের মালামাল ঝালাই, রড কাটা, গ্রিল তৈরিসহ সকল লৌহার কাজ করতেন। কেউ ভয়ে কিছু বলতে পারত না। সরকার পতনের পর তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রমাণসহ জেলায় লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সে মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে বিদ্যুৎ আইনের ৩২, ৩৩, ৪৪, ৪৭, ৪৮, ৫৪ ধারায় সি আর-৯৮/২৫, ৯৯/২৫, ১০০/২৫ মামলায় সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ২২ লাখ ৭৪ হাজার ৭৭৯ টাকা। বড় ছেলে আশিক আলী অমির (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান) বিরুদ্ধে ১ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার ৫৬৫ টাকা। ছোট ছেলে মাহতাব আলী অদ্রির বিরুদ্ধে ৪৬ লাখ ৩০৪২ টাকাসহ সর্বমোট ২ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়।
অভিযানে আরও ৪টি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ও ১১ জন বকেয়া গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
হাতিয়া বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মসিউর রহমান কালবেলাকে বলেন, বিগত ৮-১০ বছর যাবত সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী ও তার ছেলেরা প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ করে ব্যবহার করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দুই কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এত বছর কেন এ বিষয়ে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সবাই তার কাছে জিম্মি ছিলাম। কয়েকবার পদক্ষেপ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছি।
মন্তব্য করুন