বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, কিডনি রোগে আক্রান্তদের অনেকেই অপচিকিৎসার শিকার হয়ে আমাদের কাছে আসেন। বেশিরভাগ রোগী দেখা যায় রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ফার্মেসি ও হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে যায়। দিনের পর দিন ব্যথানাশক ওষুধসহ নানা ওষুধ সেবন করে কিডনিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। মূলত, অসচেতনতাই কিডনি রোগের জটিলতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী লেক ভিউ কনভেনশন হলে বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনায় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
এ সময় রফিকুল ইসলাম বলেন, কিডনি রোগীদের চিকিৎসার জন্য অবশ্যই কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। বেশিরভাগ কিডনি রোগী বিভিন্ন জটিলতায় ভোগেন। যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। অনেক রোগীকে দীর্ঘদিন ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে কিডনি জটিলতায় ভোগান্তি পোহাতে হয়। কিডনি জটিলতায় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা অনেক দুরূহ হয়ে যায়। কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত রোগীদের ডায়ালাইসিস ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে কিডনি সুরক্ষা আইন আছে, কিন্তু সে আইনের সঠিক প্রয়োগ কি হচ্ছে? আইন আছে কিন্তু তার প্রয়োগ নেই।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে ১০-১৫ শতাংশ রোগী কিডনি রোগে আক্রান্ত। সে অনুপাতে মানুষের মাঝে সচেতনতার অনেক অভাব রয়েছে। বাংলাদেশেও ২৫ শতাংশ রোগী কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত। কিন্তু সচেতনতার অভাবে রোগ শুরুর প্রথম দিকেই কিডনি ও ইউরোলজি বিশেষজ্ঞদের কাছে না আসার কারণে তাদের জটিলতা বাড়তেই থাকে। যে পরিমাণ সচেতনতা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার তা কিন্তু হচ্ছে না। তাই আমি আশা করব, বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনসহ যারা দায়িত্বশীল আছেন তারা এ সচেতনতা নিয়ে আরও বেশি কাজ করবেন এবং কিডনি রোগের স্ক্রিনিং কার্যক্রম ব্যাপকহারে সহজলভ্য করবেন, যাতে দ্রুত জটিলতার আগেই রোগ শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, চিকিৎসক ও রোগীদের স্বার্থ রক্ষার্থে যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন হচ্ছে তা কি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত সব স্টেকহোল্ডারের পার্টিসিপেশনে হয়েছে। সব দলের কি অংশগ্রহণ ছিল? ছিল না।
তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি আপনারা যে সংস্কার করবেন, তা যেন সবার অংশগ্রহণে হয়। নতুবা সে সংস্কার দীর্ঘমেয়াদি হবে না। হাজারো মানুষের রক্তে অর্জিত যে অভ্যুত্থান তা কিন্তু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
বিশিষ্ট নেফ্রোলজিস্ট প্রফেসর ডা. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হাসান চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খাঁন সোহেল, নারায়ণগঞ্জ জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মো. ফারুল আহমেদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন