গাজীপুরের কাশিমপুরের চক্রবর্তীরটেক এলাকায় চাঁদা না পেয়ে জমি দখলে এসে দোকানপাট ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এতে পাঁচজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত হয়েছেন কাশিমপুরের চক্রবর্তীরটেক এলাকার বাসিন্দা মো. হাফিজুল আসাদ, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আসিফ খান, মো. বাবুল হোসেন (৩০), মো. মোস্তাফা (৩৫), মো. মোহর আলী (৩৮)। অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা হলেন- চক্রবর্তীরটেক এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম (৪০), মো. বাবুল (৩৬), মো. আবুল (৬০), মো. বিল্লাল হোসেন (৪৫) অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জন।
আহত গণমাধ্যমকর্মী আসিফ খান বলেন, জমি দখল ও মারধরের খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও ধারণ করতে থাকি। ভিডিও ধারণের একপর্যায়ে এলোপাথাড়ি মারধরের শিকার হই আমি। ভূমিধস্য সাইফুল ইসলাম প্রথমে আমাকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন। তারপরও আমি ভিডিও করায় সে আমাকে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করলে আমি মাটিতে পড়ে গেলে তার সাঙ্গোপাঙ্গরাসহ আমাকে বেধড়ক মারধর করলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরের স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চক্রবর্তীরটেক এলাকায় ভি-কমপুর মৌজায় ১৫ম দশমিক ২৫ শতাংশ জমি পৈতৃক সূত্রে মালিক হয়ে দোকান করে ভাড়া দিয়ে আসছেন অভিযোগকারীর স্বামী হাফিজুল আসাদ। তবে অভিযুক্তরা ওই জমিসহ মার্কেট দখলের চেষ্টা করছে। এরই জেরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১০টার দিকে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমিতে এসে ৭টি দোকান ভাঙচুর করে অন্তত ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এরপর আবার মঙ্গলবার বেলা ১০টার দিকে অভিযুক্ত সাইফুলসহ ১৫-২০ জন জমিতে এসে সেখানে বাড়ি নির্মাণে বাধা দেয়। তারা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এতে রাজি না হওয়ায় তারা অভিযোগকারীর স্বামী হাফিজুল আসাদকে এলোপাতাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত করে। এ ছাড়া অভিযুক্ত মো. সাইফুল ইসলাম ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাফিজুল আসাদের মাথায় কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এতে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্বাসরোধ করে ওই অভিযুক্ত। আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও কয়েকজনকে তারা মারধর করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মারধরের শিকার হাফিজুল আসাদ বলেন, ভূমিদস্যু সাইফুল আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। সে আমার কাছে দাবিকৃত ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে আমার পিছু নিয়েছে। স্থানীয় এক বিএনপি নেতার প্রভাব খাটিয়ে সে এমন বেপরোয়া আচরণ করছে। আমি বিচার চেয়েও পাচ্ছি না। ৫ আগস্টের আগে সে আওয়ামী লীগ করলেও বর্তমানে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিশে এখন বিএনপি সাজার চেষ্টা করছে। এখনো বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষকে হুমকি দিয়ে হয়রানি করছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা এগিয়ে না আসলে হয়তো আজ আমার আর আপনাদের সামনে কথা বলা হত না। আমাকে পিটিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে করে হত্যা করতে চেয়েছিল। স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে যায় সে এবং যাওয়ার সময় বলে যায় দুদিনের মধ্যে তাকে ৫০ লাখ টাকা না দিলে সে আমাকে মেরে ফেলবে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি অসত্য। আমি কাউকে মারধর করিনি এবং আমি কারো জমি দখল করতে যাইনি। সেখানে আমার কেনা সম্পত্তি রয়েছে।
কাশিমপুর থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে থানায় আহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অভিযোগ করেছেন। ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন